ভোজ্যতেলের দাম কমার আশা বাণিজ্যমন্ত্রীর
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘আমার ধারণা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। নতুন দাম অনুযায়ী দাম কমবে। পাম অয়েলে তো যথেষ্ট প্রভাব পড়বে মনে করি। সয়াবিনের অতটা বাড়বে না, সে রকমই আমরা আশা করি।’
বৃহস্পতিবার (২ জুন) দ্বিতীয় চা দিবস উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী ভোজ্যতেলের দাম কমার এ ইঙ্গিত দিয়েছেন।
টিপু মুনশি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমা শুরু হয়েছে এবং ইন্দোনেশিয়া রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এক মাস, দুই মাস ধরে আমরা রিঅ্যাসেস করব। খুব শিগগিরই পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে মে মাসের পুরো তথ্য নিয়ে আমরা রিভিউ করব।’
তিনি বলেন, ‘আজকে দাম কমেছে। আজকের দামের প্রভাব ফেলতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় মাস।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সুখবর হচ্ছে, পাম অয়েলের দাম কমেছে এবং সয়াবিনের দাম কমার দিকে। ছয়-সাত দিনের মধ্যে যে সভাটা হবে, সেটা অ্যাসেস করে দেখে নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে।’
চালের দাম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চাল কন্ট্রোল করে মূলত খাদ্য মন্ত্রণালয়। এই ব্যাপারে আমাদের সাহায্য চাইলে আমরা সাহায্য করব। খাদ্য মন্ত্রণালয় আটটি টিম করেছে। এ সব টিম ইতোমধ্যে বেরিয়ে পড়েছে জানার জন্য এবং কতটুকু স্টক আছে, তা বের করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, যেকোনো কিছুর সুফল পেতে হলে সময় দিতে হয়। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে তারা আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যাবে। আমাদের দেশে চালের অভাব নেই। কোথাও কোথাও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি সিম্পল প্রশ্ন আমার রয়ে গেছে। আমি সেদিনও বলতে চেয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ‘যে চালটা ৫০ টাকা, সেটি শুধু প্যাকেট করেই ৭০ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি করছে। একই চাল খোলাবাজারে ক্রেতা কম দামে কিনতে পারে। নিশ্চয়ই তারা কাস্টমার পাচ্ছে বলেই বিক্রি করতে পারছে। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে তারা আজকে প্যাকেটজাত খাবার খাচ্ছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের লক্ষ্য স্বল্প আয়ের মানুষের স্বার্থ দেখা। আপনারা জানেন দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। যাদের টাকা আছে তিনি কী করবেন, সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। সরকারের লক্ষ্য নিম্ন আয়ের মানুষের স্বার্থ দেখা। আমাদের কথা হলো ন্যায্য মূল্যের যেসব পণ্য পাওয়া উচিত, সেটা আমরা অবশ্যই দেখব।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের দেখা দরকার সাধারণ মানুষ সঠিক মূল্যে পণ্য কিনতে পারছে কি না। ক্রয়ক্ষমতার দুইটি দিক রয়েছে। একটি হলো যারা উৎপাদনকারী এবং যারা ভোক্তা। আমরা যদি এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাই যে, উৎপাদনকারী আর ইন্টারেস্ট পাচ্ছেন না, তাহলে কিন্তু প্রভাব পড়বে। আমাদের দেখতে হবে উৎপাদন খরচ, প্রফিট, মার্জিন কতটা থাকা উচিত এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রাইসের ক্ষেত্রে যেন কোনোভাবে বড় ধরনের পার্থক্য না থাকে।’
প্রসঙ্গত, গত প্রায় এক বছর ধরে দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা চলছে। করোনার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের কাঁচামালের দাম দফায় দফায় বাড়ার কারণে দেশীয় বাজারে দাম বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। প্রতিবারই সরকারি হস্তক্ষেপে দাম নির্ধারণ করা হলেও প্রতিফলন ঘটেনি বাজারে।
সর্বশেষ গত ঈদের পরের দিন ৫ মে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে কয়েক দিন বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যায়।
এনএইচবি/আরএ/