ডলারের একক দর বাধার মাসে কমল প্রবাসী আয়
রোজার ঈদকে কেন্দ্র করে এপ্রিলে বেশি প্রবাসী আয় আসে দেশে। তারপরও ডলারের দাম নিয়ে হই-চই পড়ে গত মে মাসে। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের এক দর নির্ধারণ করে দিয়েছে ৮৯ টাকা। এরই মধ্যে মে মাস শেষে প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ল। গত মাসে প্রবাসীরা ১৮৮ কোটি (১.৮৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের মাস এপ্রিল তুলনায় কম। এপ্রিলে ২০১ কোটি (২.০১ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অপরদিকে গত বছরের মে মাসের চেয়েও কম এসেছে গত মাসে প্রবাসী আয়। কারণ গত বছরের একই সময়ে প্রবাসী রেমিটেন্স পাঠিয়েছিল ২১৭ কোটি ডলার। ফলে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
জানা গেছে, মে মাসে কিছু ব্যাংক প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রতি ডলার ৯৫ টাকার বেশি দামে কিনেছে। খোলা বাজারে এই ডলার আরও বেশি বিক্রি হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচনা শুরু হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত রোববার (২৯ মে) প্রবাসী আয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ টাকা ২০ পয়সা দর বেঁধে দেয় ব্যাংকগুলোকে। ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় মাসের শেষ তিন দিনে কমে যায়। বাইরে বেশি দাম পাওয়ায় অনেকে হুন্ডিতে পাঠাচ্ছেন। এতে তারা লাভ বেশি পাচ্ছে।
ঈদ সামনে রেখে এপ্রিলে ২০১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, একক মাসের হিসাবে যা ছিল ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এরই ধারাবাহিকতা ঠিক থাকার কথা থাকলে মাস শেষে ভাটা দেখা দিয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ‘রোজার ঈদের কারণে উৎসব সামনে রেখে এপ্রিলে প্রবাসীরা বেশি বেশি টাকা পাঠিয়েছেন । ঈদের পরের মাসেও ভালো রেমিট্যান্স এসেছে। তবে তা কম হলেও সামনে কোরবানির ঈদ আসছে। চলতি মাসে বেশি রেমিট্যান্স আসবে। সবকিছু মিলিয়ে চলতি মাসে রেমিট্যান্স বাড়বে।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির মধ্যেও সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি ছিলো। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক বছর বা অর্থবছরে এত বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই অর্থনীতির এই সূচকে ভাটার পড়ে। প্রতি মাসেই কমতে থাকে; তবে তিন মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
জেডএ/