শনিবারের বাজারদর
এবার চিনির কেজি ৯০ টাকা
বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও কমছে না চালের দাম। তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৬ টাকা বেড়েছে। আমদানিকৃত চিনির দামও বেড়ে ৯০ টাকা কেজি হয়ে গেছে। ডিমের দাম ১২০ টাকা ডজন থেকে কমছে না। সরকারের বেধে দেওয়া বাড়তি দামেই ১৯৮ টাকা লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। আটার দামও বেড়ে ১১৫ টাকা হয়ে গেছে। তবে প্রায় সবজির কেজি ৩০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, অনেক পণ্যের দাম বাড়তি। একেবারে লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্য পণ্য। কমছে না। এরফলে বেকারির পণ্যের দামও অনেক বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
কমছে না আটা ময়দার দাম
কোনো কোনো দোকানে ২ কেজির আটা সর্বোচ্চ ৯৮ টাকা বিক্রি করা হলেও একই পরিমান আটা ১১৫ টাকাও বিক্রি করছে অনেক খুচরা ব্যবসায়ী। তারা বলছেন, যেভাবে কেনা সেভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। অর্থাৎ কম দামে হলে ২ কেজি আটা ৯৮ টাকা, বেশি দামে হলে ১১৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের ফরিদগঞ্জ স্টোরের জাহাঙ্গীর ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘২ কেজি আটা বর্তমানে ১১৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কয়েক দিন আগেও যা ৯৮ টাকা বিক্রি করা হতো। এবার চিনির দামও বেড়েছে। আগে এক কেজি প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৯০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। অপরদিকে ডালের দামও কমছে না। ১১০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
ইউসুফ স্টোরের মালিক ইউসুফ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘২ কেজি আটা ১০৮ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আগে ৯৮ টাকা বিক্রি করা হতো। চিনির দামও বেড়ে গেছে। তা আগে ৮০ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা এবং দেশি চিনি ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ডালও বাড়তি দামে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। বাড়ছে মসলার দাম।
কোরবানির ঈদ আসতে অনেক দেরি থাকলেও কিছু কিছু মসলার দামও উর্ধ্বমুখী বলে বিক্রেতারা জানান। মায়ের দোয়া স্টোরের বাবলু বলেন, ‘জিরার দাম ৪১০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’ তবে আগের ঘোষণা করা দরেই সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। ৫ লিটার ৯৭০ থেকে ৯৮০ টাকা, ২ লিটার ৩৯০ টাকা ও ১ লিটার ১৯৮ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের দামে মাছ মাংস
ঈদ-উল ফিতরের পরে গরুর মাংস কেজি হঠাৎ ৭০০ টাকা হলেও বর্তমানে কমে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। খাসির মাংসও আগের মতোই ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি। পাকিস্তানি মুরগিও আগের মতো ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। তবে পোল্ট্রি মুরগির কেজি কমে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে নুরজাহান চিকেনের জসিম জানান। আগের সপ্তাহের মতোই মুরগির ডিম ১২০ টাকা ডজন ও হাঁসের ডিম ১৫০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। কোনোক্রমেই কমছে না দাম। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা বেশি। কিন্তু সরবরাহ কম। তাই বাড়তি দাম।
অপরদিকে মাছও আগের মতো বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। রুই ও কাতল মাছ ২৩০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, ইলিশ ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৭০০, কাচকি ৩০০ টাকা ও কাজলি ১০০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে ঈদের পর ইলিশ মাছের দাম বেড়ে ১ কেজির দাম ১৪০০ টাকা, ১ কেজির বেশি ১৫০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
৫০ টাকার মধ্যে সবজির কেজি
আগের সপ্তাহের মতোই প্রায় সবজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। করলা ও পটল ৪০ টাকা কেজি, ঢেড়স ৩০ থেকে ৪০, বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, লেবুর ডজন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কুমড়ার জালি ৪০ থেকে ৭০ টাকা, লাল ও পাট সাক ১০ টাকা করে আটি, পুই সাক ২০ থেকে ৩০ টাকা আটি বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। তবে গত সপ্তাহের মতোই পেঁয়াজে ঝাঁজ নেই বাজারে। আগের মতোই পাল্লা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ও প্রতি কেজি ৪০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি এবং দেশি রসুনের দামও বেড়ে ১০০ টাকা কেজি আদা ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
জেডএ/এএজেড