বাজারে ভীতি সৃষ্টি করতে চায় না সরকার: টিপু মুনশি
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, সত্যি কথা বলতে কি আমরা এমন কিছু করতে পারি না যাতে বাজারে একটা ভীতির সৃষ্টি হয়। সাপ্লাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা একই সঙ্গে এমনভাবে আইন প্রয়োগ করতে চাই যাতে বাজারে কোনো ধরনের ভীতির সৃষ্টি না হয়। আমরা নানাভাবে ভয় দেখিয়েছি।
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের কারসাজির বিরুদ্ধে সরকারের আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন।
সোমবার (১৬ মে) সচিবালয় বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়াট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত বি এস আর এফ সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংলাপ পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
টিপু মুনশি বলেন,আপনারা দেখেছেন দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার, র্যাব, পুলিশ ধরে ধরে মজুদকারীদের কাছ থেকে ভোজ্যতেল উদ্ধার করে পুরনো দামে বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে। মজুদদাকারীদেরকে জরিমানা করছে।
আইনি ব্যবস্থা বলতে জরিমানাও আইনি ব্যবস্থা, জেলে পাঠানোও আইনি ব্যবস্থা। দু’এক জায়গায় জেলেও পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা যারা অধিক মুনাফা করতে চায় তাদের ব্যাপারে সরকার সব সময় সতর্ক।’
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, পেঁয়াজের বিষয়টা বলি, এইটা দেখছে মূলত কৃষি মন্ত্রণালয়। তাদের উদ্দেশেটা হচ্ছে কৃষককে ন্যায্য মূল্য দেওয়া। আমরা যে দামটা নির্ধারণ করেছি সেটা হচ্ছে লোয়ার লেভেলে কৃষককে কেজিতে ২৫ টাকা দেওয়া।
তারপর ট্রান্সপোর্ট, পঁচে যাওয়া, খুচরা বিক্রেতা এসব মিলিয়ে পেঁয়াজের মূল্য ৪৫ টাকা থাকা উচিত। ৪৫ টাকা দাম থাকলে আমরা মনে করি এটা রিজনেবল প্রাইস। ঢাকার মানুষের ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ খাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাজার পর্যবেক্ষণ করছি। কৃষকরা জাতে দাম পান, ভোক্তারা যাতে রিজনেবল প্রাইসে কিনতে পারেন।’
বাজারের নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, আমি মনে করি সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত নয়। ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করবেন না। এটা হচ্ছে সাপ্লাই ও ডিমান্ডের উপর...। আজকে যখন পেঁয়াজের দাম কমে যায় তখন তো কেউই নিয়ন্ত্রণ করে না। সাপ্লাই যদি ঠিক থাকে তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমাদের দেখা দরকার সাপ্লাই ঠিক আছে কি না, কেউ অহেতুক সুযোগ নিচ্ছে কি না।
তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীবান্ধব। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেভাবে যে সিস্টেমে চলে আমরা সেভাবেই সবকিছু করে দিচ্ছি।
আজ থেকে ট্রাকে করে টিসিবি পণ্য বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু রবিবার রাতে হঠাৎ করে সেটি স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন রমজানে আমরা এক কোটি পরিবারকে দু’বার পণ্য দিয়েছিলাম। এখনো সেগুলো আমরা এক কোটি পরিবারকে দিতে চাই। ১৫-১৬ তারিখ থেকে যেটা দিতে চেয়েছিলাম সেটা কিন্তু এক কোটি পরিবারকে নয়। সেটা ট্রাকে করে কমবেশি ১৫ লক্ষ মানুষকে। যেমন ঢাকা, চট্রগ্রামসহ শহরগুলোতে।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শহরের ১৫ লাখ মানুষকে দিলে গ্রামের যে ৮৫ লাখ মানুষকে কিন্তু দেওয়া হচ্ছে না। তোমরা একটু সময় নিয়ে দেও।
তিনি বলেন, ঢাকাতে যে আমরা দেব...এর আগেরবার ঢাকাতে আমরা কোনো তালিকা পাইনি। যে পদ্ধতিতে গ্রামের মানুষকে দেওয়া হয়েছিল, ঢাকাতে সেটা অনুসরণ করা হয়নি। ঢাকাতে আমরা ১৫ লাখ মানুষকে ট্রাকে করে দেওয়া হয়েছে।
আমাদের কাছে যে নির্দেশনা এসেছে তাতে ৮৫ লাখ মানুষকে বাদ দিয়ে ১৫ লাখ লোককে দেওয়ার চাইতে একটু খানি চাপ দিয়ে ১৫ দিন সময় নিয়ে যদি ঢাকার তালিকা আমরা পেয়ে যাই তাহলে জুন মাসে আমরা সবাইকে একসঙ্গে দিতে পারব। এই ১৫ দিন পিছিয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে একটু এডভান্স হওয়া।
গম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পৃথিবীর আরও পাঁচটা গম উৎপাদনকারী দেশের সঙ্গে জি টু জি চুক্তি করার। যাতে সরবরাহ ঠিক রাখা যায়।
এনএইচবি/এমএমএ/