পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আসবে: অর্থমন্ত্রী
বিভিন্ন সময়ে দেশ থেকে যেসব টাকা পাচার হয়েছে তা আবার ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ ও ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ২০১৯ ও২০২০ সালের জন্য ৬৭টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিদেশে ডিপোজিট রাখলে ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। আর আমাদের দেশে সার্ভিস চার্জ নেই। বরং ডিপোজিট এবং সঞ্চয় ইন্টারেস্ট দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার বর্ণনা করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের রিজার্ভ মাত্র ৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন (৯০০ কোটি) ডলার ছিল। ১৩ বছরের ব্যবধানে ৪৮ বিলিয়নে পৌঁছে গেছে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ কমে ৪২ বিলিয়নে আছে। ৪০ বছরে যা বিনিয়োগ হয়নি এই কয় বছরে তা হয়েছে। অনেকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করলেও আমাদের সঙ্গে কারো মেলানো যাবে না। গত ১৩ বছরে পৃথিবীতে জিডিপির অর্জন টপ নম্বর ওয়ান। সারা বিশ্বে খুঁজলে আজ বাংলাদেশকে পাওয়া যাবে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত। স্বল্পন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এসেছি। ধনীরা এই কাতারে থাকে। ২০৪১ সালে ২০টি দেশের মতো উন্নত ও শক্তিশালী দেশ হবে বাংলাদেশ।’
প্রবাসীদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্স পাঠানোর অনেক উৎস আছে। কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে কোনো প্রশ্ন করা হবে না। আবার অন্যভাবে রেমিট্যান্স দেশে এলে অর্থনীতিতে কাজে লাগা যায় না, কোনো পরিকল্পনা করা যায় না। আগে দেশে গড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসত। কিন্তু বৈধভাবে কাজ করার জন্য স্বীকৃতিস্বরুপ ২ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রণোদনা ঘোষণার পর ১৮ বিলিয়ন ডলার হয়ে গেছে। দ্বিতীয় বছরে ২৪ বিলিয়ন ডলারে এসে গেছে। তাই আপনাদের অনুরোধ করব দেশে বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠান। আমাদের সাহায্য করেন। কারণ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। তাই এই অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য সবার সহযোহিতা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘কেউ ঘুষ দেবেন না, ঘুষ খাবেন না। একে অপরকে সাহায্য করবেন। সৎ কাজে প্রতিযোগিতা করে বিজয়ী হতে হবে।’
এক প্রবাসীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে যে সব অর্থ পাচার হয়েছে তা ফিরে আসবে। কারণ বাইরে ডিপোজিট রাখলে দুই শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। আর আমাদের দেশে সঞ্চয়ে লাভ দেওয়া হয়। খুব বেশি সময় দূরে নয়। আমরা আরও সুবিধা দেব, যাতে পাচার করা অর্থ আবার ফিরে আসে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে করিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
উল্লেখ্য, প্রবাসীদের স্বীকৃতিস্বরুপ ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া শুরু করে। কিন্তু করোনার কারণে গত ২০১৯ ও ২০২০ সালে বন্ধ ছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যাংকসহ ৬৭টি সম্মননা প্রদান করা হলো।
জেডএ/আরএ/