আন্দোলন হলে পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে: বিজিএমইএ
ছবি সংগৃহিত
ন্যূনতম মজুরির দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনের নামে কোনো পোশাককারখানা ভাঙচুর বা আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরাস্থ বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ‘উদ্ভূত শ্রম পরিস্থিতি’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
এ সময় এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি শহিদ উল্লাহ আজিম এবং এস এম মান্নান কচিসহ পোশাক খাতের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করার জন্য বহিরাগতরা উস্কানি দিচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুজন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক ও কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানার মালিকরা শ্রম আইনের ১৩ এর ১ ধারায় কারখানা বন্ধ করতে পারবেন। তবে বন্ধ থাকাকালীন সময়ে শ্রমিকরা কোনো বেতন-ভাতা পাবেন না।
শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, প্রতি মুহূর্তে শিল্পাঞ্চলগুলোর পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং শিল্পের সুরক্ষার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছি।
শ্রমিকদের মজুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার মজুরি বোর্ড গঠন করেছে। সরকার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত দেবে মালিকরা তা বাস্তবায়ন করবে। নভেম্বরে ন্যূনতম মজুরির বিষয় চূড়ান্ত হবে। ডিসেম্বর থেকে বাস্তবায়ন হবে।
ফারুক হাসান আরও বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, এরও আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে বিশ্বব্যাপী নজীরবিহীন যে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য এখন উন্নত দেশগুলো সংকোচনশীল মুদ্রানীতি গ্রহণ করায় ভোক্তাদের আয়-ব্যয় এবং পণ্যের চাহিদায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ফলে আমাদের পণ্যের খুচরা বিক্রি কমে গেছে, প্রধান বাজারগুলোর পোশাক আমদানি কমে এসেছে।
তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামগ্রিক পোশাক আমদানি আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি অর্থ মূল্যে কমেছে ২২ দশমিক ২৭ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি কমেছে প্রায় ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আমি শ্রমিক ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-আপনাদের অবদানের কারণে তৈরি পোশাকশিল্প এ পর্যায়ে আসতে পেরেছে। আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে তৈরি পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এবং ক্রেতাদের আস্থা বিনষ্ট হয়। তারা তৈরি পোশাক শিল্প থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলে আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আপনারা কর্মসংস্থান হারাবেন।’
কারখানা মালিকেরা দেশের অর্থনীতি ও পোশাক শিল্প সচল রাখতে বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমি মালিকদের জানাতে চাই, দেশের অর্থনীতি ও শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সুরক্ষার স্বার্থে যদি কোনো কারখানায় শ্রমিকেরা কাজ না করে, তাহলে আপনারা কারখানা বন্ধ করে দিতে পারেন।’