রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩১ ভাদ্র ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

যে কৌশলে ইসলামী ব্যাংকের ৫০ হাজার কোটি টাকা এস আলমের পকেটে

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকগুলোর যেন চিরচেনা রূপ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। একের পর এক ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সামনে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি সময়ে সব থেকে বেশি আলোচনায় রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। যার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ।

এবার বেরিয়ে এসেছে কীভাবে সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। এই টাকা বের করতে মানা হয়নি কোনো নিয়মকানুন।

ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এই টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।

ঋণ হিসেবে অর্থ বের করতে তৈরি করা হয় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান। আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে টাকা বের করেছিলেন, অনেকটা একই কায়দায় ইসলামী ব্যাংক থেকেও অর্থ বের করা হয়। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধের উপক্রম, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

পি কে হালদার ছিলেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন আভিভা ফাইন্যান্স ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

এদিকে ইসলামী ব্যাংক থেকে পাচার হওয়া টাকা এখন আদায় করা যাচ্ছে না, ফলে ব্যাংকটি তারল্যসংকটে ভুগছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো তারল্য জমা রাখতে না পারায় প্রতিদিন জরিমানা দিচ্ছে। আবার একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার নিজের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘টাকা ছাপিয়ে’ দেড় বছর ধরে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ব্যাংকটির খারাপ অবস্থার জন্য যারা দায়ী, তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এস আলম গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর ইসলামী ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। এসব কর্মকর্তার বেশির ভাগই সাইফুল আলমের নিজের এলাকা পটিয়া উপজেলার। ফলে ব্যাংকটির অর্ধেক কর্মকর্তাই এখন পটিয়ার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ পাওয়া পুরোনো কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেছেন ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়ামুক্ত’ করতে। এর মধ্যে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়েছেন। এই পদে তার নিয়োগসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার আগে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকটি খেয়ে ফেলার জন্য এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজই করেছে, ব্যাংকটি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই ব্যাংকের টাকা ডলার হয়ে বিদেশে চলে গেছে। এখন এস আলম গ্রুপ ও যাদের নামে ঋণ বের হয়েছে, তাদের সব সম্পদ জব্দ করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতে ঋণের এক-তৃতীয়াংশ টাকাও আদায় হবে কি না, সন্দেহ আছে বলেও জানান তিনি।

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ধীরে ধীরে শেয়ার ছেড়ে দেয় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), দুবাই ইসলামী ব্যাংক, আল-রাজি গ্রুপ, কুয়েতের সরকারি ব্যাংক কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস, সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিস্ট এজেন্সিসহ বেশির ভাগ উদ্যোক্তা ও সাধারণ শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া স্থানীয় জামায়াত–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা, ইসলামিক সেন্টারসহ অনেককে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ছেড়ে দিতে হয়।

আটকা পড়ে আছে যেসব ঋণ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগে বিদেশিদের শেয়ার ছিল ৫২ শতাংশের মতো, যা এখন ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ যখন ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন এটিতে এস আলমের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছিল তিন হাজার ছয় কোটি টাকা। চট্টগ্রামে ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখার গ্রাহক ছিলেন তিনি। তখন ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ৬১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা আর আমানত ছিল ৬৮ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। কর্মকর্তা ছিল ১০ হাজারের কম।

নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আমানত বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন নতুন শাখা খুলে পটিয়ার লোকদের নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ফলে সারা দেশে ব্যাংকটির শাখা এখন ৩৯৫টি। এর বাইরে রয়েছে ২৫০টি উপশাখা। ২০২৩ সাল শেষে ইসলামী ব্যাংকে আমানত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা ও ঋণ ১ লাখ ৬০ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ আমানতের চেয়ে বেশি টাকা ঋণ হিসেবে বের করে দিয়েছে ব্যাংকটি। বাড়তি এই টাকা এসেছে মূলত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে।

ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণমূলক মূলধন ১০ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। ফলে একটি গ্রুপকে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ফান্ডেড ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ও নন–ফান্ডেড ঋণ ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা ঋণ দিতে পারে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটি গ্রুপ ঋণ পেতে পারে ২ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংকঋণের টাকা পাচার করতে তাই এস আলম গ্রুপ একাধিক গ্রুপ তৈরি করেছে, ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছে।

প্রাপ্ত নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এস আলম নাম যুক্ত আছে ইসলামী ব্যাংক থেকে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণই ১৪ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। আর সাইফুল আলমের মেয়ের স্বামী বেলাল আহমেদের ইউনিটেক্সের ঋণ ৪৫৪ কোটি টাকা। এর বাইরে এস আলম–সংশ্লিষ্ট ঋণের পরিমাণ ৩২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এসব ঋণ ছড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও রাজধানীর বিভিন্ন শাখায়। এছাড়া রাজশাহীর নাবিল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা।

নাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি সৎভাবে ব্যবসা করি। অন্য ব্যাংকে আমার ঋণে কোনো সমস্যা নেই। ইসলামী ব্যাংকের ঋণে আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে আমার নামে যেসব ঋণ আছে, আমি তা শোধ করে দেব। বছরে আমার ৩০ হাজার কোটি টাকার ভোগ্যপণ্য কেনাবেচা হয়। আমার গ্রুপে ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ছেলে। ব্যাংকের সার্বিক বিষয়ে জানতে তাকে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে ফোন করা হলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এখন ব্যাংকের কেউ ফোন ধরছেন না। আমি কিছু জানতেও পারছি না। আমি অনলাইনে সভায় অংশ নিই। মতামত আমি দিয়ে থাকি। সব সময় তা গ্রহণ হয়নি। ঋণ কে কত টাকা নিয়েছে, এ নিয়ে আমি কিছুই জানি না।

গত সোমবার ইসলামী ব্যাংকের ‘বৈষম্যবিরোধী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষাকারী ব্যাংকার সমাজের’ সমন্বয়ক আবু ওয়ালিদ চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। ১০ হাজারের বেশি জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের অনেকের যোগ্যতা নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যাংক থেকে এখনো নানাভাবে অর্থ বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছে এস আলম গ্রুপ। পাশাপাশি গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ঋণের নথিপত্র সরানো ও তথ্য-উপাত্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিছু কর্মকর্তা। সে কারণে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন এবং এস আলমকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান আবু ওয়ালিদ চৌধুরী।

আরো বলা হয়, পটিয়া এলাকার ব্যাংকারদের পাশাপাশি গতকালও ব্যাংকে যাননি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলা, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ ও আলতাফ হুসাইন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিনসহ এস আলমপন্থী হিসেবে পরিচিত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন অন্য কর্মকর্তারা।

ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধানদের প্রায় সবাই চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসা কিংবা চট্টগ্রামের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বে ছিলেন। এমনকি সাইফুল আলম তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও ব্যাংকটির ডিএমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সাতটি ব্যাংকের চলতি হিসাবে টাকা না থাকার পরও সেগুলো কীভাবে চলছে তা জানতে চাইলে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সরাসরি কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, এই সবকিছু এখন নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর। তারা যে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই চলবে।

Header Ad

পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল

দলীয় সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন কেজরিওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

আকস্মিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের দিল্লি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কারাগার থেকে ছয় মাস পর জামিনে বেরিয়ে এই ঘোষণা দিলেন তিনি।

রোববার (১৫ সেপ্টেস্বর) দুপুরে দলীয় সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় দিল্লিতে আগাম নির্বাচনেরও দাবি জানান আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান কেজরিওয়াল। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

কেজরিওয়াল বলেন, ‘দুই দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে চলেছি। মানুষ রায় না দেওয়া পর্যন্ত আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব না। আইনি আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেয়েছি, এখন জনতার আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেতে চাই।’

‘মানুষ রায় না দেওয়া পর্যন্ত আমি চেয়ারে বসব না। প্রত্যেক বাড়িতে যাব, দরজায় দরজায় পৌঁছব। মানুষের রায় না পাওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব না।’

কেজরিওয়াল আরো বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করার পর আম আদমি পার্টির কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।’

পদত্যাগের কারণ ব্যাখা করতে গিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, ‘আদালত জামিন দিয়েছে। এই মামলা চলবে। আইনজীবীদের বললাম, আদালত থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব না। যে আইনে জামিন হয় না, সেই আইনে আদালত থেকে জামিন পেয়েছি। কিন্তু আজ আমি জনতার আদালতে এসেছি। আপনারা বলুন, আপনারা আমাকে দোষী মনে করেন না নির্দোষ? কেজরিওয়াল সৎ না অসৎ? দু'দিন পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ছাড়ছি আমি। মানুষকে রায় না শোনানো পর্যন্ত ওই চেয়ারে বসব না আমি’।

দিল্লির আবগারি নীতি কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মামলায় শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জামিন দেয় কেজরিওয়ালকে। জামিন আদেশের কয়েক ঘণ্টা পর তিহার জেল থেকে বেরিয়ে আসেন আম আদমি পার্টি।

মাঝখানে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দলের হয়ে প্রচারের জন্য আম আদমি পার্টির নেতাকে কয়েক দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। পরে আবার তিহার জেলে পুনরায় আত্মসমর্পণ করেন। অবশেষে ছয় মাস পর শুক্রবার জেল থেকে মুক্তি পান কেজরিওয়াল।

কেজরিওয়ালকে জামিনের শর্তে বলা হয়, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে যেতে পারবেন না; সরকারী নথিতে স্বাক্ষরও করতে পারবেন না।

এছাড়া শুক্রবার শীর্ষ আদালত আদেশ দেয়, কেজরিওয়ালকে মামাল অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত বিচারের শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হবে। দ্রুত বিচারের বিচারের সমাপ্তি নিশ্চিত করতে আদালতকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে।

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ৪ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ৪ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

কুড়িগ্রামে আলোচিত অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, বিচার না পেয়ে লজ্জায় স্বামী-স্ত্রীর বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা এবং স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় চার আসামির মধ্যে ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা গেলেও মামলা ৩ মাস ১৫ দিন পার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে শুকুর আলী (৫০)।

আরও পড়ুন: গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ লজ্জায় স্বামী স্ত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টায় স্ত্রীর মৃত্যু

 

এর আগে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে রাজিবপুর পুলিশ। গত শনিবার (১ জুন) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রধান আসামি মো. জয়নাল আবেদীন (৪৮) ও আরেক আসামি মো. আলম হোসেন (৪০)।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে বিষপানে নারীর মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২

পরে এ ঘটনায় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি মো. সোলায়মান (২৯) কে যৌথ অভিযানে ১৫ জুন শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এবং র‍্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে আলোচিত গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় সোলায়মানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

সোলায়মানকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, আমরা বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বসহকারে দেখেছি। র‌্যাবের যৌথ অভিযানে পলাতক আসামি মো. সোলায়মান (২৯) গ্রেপ্তার হয়েছে। এছাড়াও পলাতক আসামি শুক্কুর আলীকে (৫০) ধরতে তৎপর রয়েছে র‌্যাব।

পলাতক আসামী শুকুর আলীর বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিমুর রহমান বলেন, আমি যেহেতু তৎকালীন সময়ে রাজিবপুর থানার দায়িত্বে ছিলাম না। থানার আয়ুর কাছে তথ্য নিয়ে জানাতে পারবো।

আরও পড়ুন: সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামির স্বীকারোক্তি, ধরাছোঁয়ার বাইরে পলাতকরা

এছাড়াও রাজিবপুরের জাউনিয়ারচর মিয়াপাড়ায় জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজন মামুন, আব্দুল্লাহ এবং কেসমত এখনো পুলিশের রাডারের বাইরে।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা

গার্মেন্টস শ্রমিকের ধর্ষণ চেষ্টাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জালন ও মানববন্ধন করে শ্রমিক বৃন্দ, কুড়িগ্রাম।

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এছাড়াও গ্রেফতার না হলে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছিল তারা। পরে গত ১২ জুন ২০২৪ মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হয়।

 

একটি সূত্রে জানা যায়, একটি অডিও কল রেকর্ড নিয়ে আলোচনায় আসার পর কুড়িগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম নির্দেশেই রাজিবপুর থানা মামলাটি গ্রহণ করে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ভুক্তভোগী কোহিনুর আক্তার বলেন, মামলা নিতেও সময় ক্ষেপন করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিমুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে পুলিশ।

এদিকে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি আব্দুল্লাহ ও কেসমত এর বিরুদ্ধে মিয়াপাড়া ওসিমন নেসা মাদরাসার সেক্রেটারী আজিজুর রহমান ক্বারীকে মারধর, হত্যাচেষ্টা ও হুমকি দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর আসরের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় আব্দুল্লাহ ও কেসমত আলী আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের হাতে থাকা রড দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মেরে জখম করে। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে। পরে আমি রাজিবপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে জামালপুরে একটি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করলে সেখান থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করি। ঘটনার পরে থানায় অবহিত করি এবং একটি অভিযোগ প্রদান করি।

আজিজুর রহমান ক্বারীকে মারধর, হত্যাচেষ্টা ও হুমকি বিষয়ে রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সেলিমুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আনতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।

ভারত বধের লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছাড়ল বাংলাদেশ দল

ভারত বধের লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছাড়ল বাংলাদেশ দল। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট জয়ের পর বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন ক্রিকেটাররা। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তরফে ক্রিকেটারদের বোনাসও দেওয়া হয়েছে। অবশ্য পাকিস্তান সিরিজের পর আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ভারতের বিপক্ষে দুটি টেস্ট ম্যাচ এবং তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আজ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেশ ছাড়লেন ক্রিকেটাররা।

দুপুর ১টা ৫ মিনিটের ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন ক্রিকেটাররা। দলের সঙ্গে এদিন ১৫ ক্রিকেটার গিয়েছেন। এ ছাড়া ইংল্যান্ড থেকে ভারতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের।

দেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন শান্ত। এ সময় নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো দল হিসেবে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চেষ্টা করবো, যাতে ভালো ক্রিকেট খেলা যায়। বাংলাদেশ দল জিতুক এটাই পরিকল্পনা। সেই লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নামব। আর আমি নিজেও ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো দলের হয়ে অবদান রাখার।

ভারত সিরিজ চ্যালেঞ্জিং হবে মন্তব্য করে টাইগার অধিনায়ক আরও বলেন, এই সিরিজটা আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ তারা আমাদের থেকে র‌্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচদিন ভালো ক্রিকেট খেলা। কারণ বেশিরভাগ ম্যাচে শেষ দিনে গিয়ে ফলাফল হয়। তাই শেষদিন পর্যন্ত খেলা নিতে পারলে আমাদের হয়তো একটা সুযোগ থাকবে। কী ধরনের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, সেটাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কোচের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানে আমাদের যেহেতু অনুশীলন সেশন রয়েছে, তাই আশা করছি ভালো কিছুই হবে।

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বারম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ১৯ সেপ্টেম্বরে। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে ২৬ সেপ্টেম্বরে কানপুরে। দুটি টেস্ট ম্যাচই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। টেস্ট শেষে মাঠে গড়াবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, নাহিদ রানা, জাকের আলি অনিক, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

সর্বশেষ সংবাদ

পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ৪ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে
ভারত বধের লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছাড়ল বাংলাদেশ দল
টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা: ত্রাণ উপদেষ্টা
এমপি ফজলে করিমের ২৪ বছরের গুম-খুনের রাজত্ব
যুদ্ধবিরতির চুক্তি ও জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ
স্টেট ইউনিভার্সিটিতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ২৫ শিক্ষার্থী, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা
আন্দোলনে নিহত ৮৭৫ জনের মধ্যে ৪২২ জনই বিএনপির: মির্জা ফখরুল
পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে সহযোগীতা করবে যুক্তরাষ্ট্র: অর্থ উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠক
যেভাবে রাডার ফাঁকি দিয়েছিল শেখ হাসিনার ফ্লাইট
অন্তর্বর্তী সরকারকে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
ত্রাণের টাকা কোথায়, জানালেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গ্রেপ্তার
ইনজুরি থেকে ফিরেই মেসির জোড়া গোল, জিতল মায়ামি
দুপুরের রান্না করতে দেরি হওয়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা
নাইজেরিয়ায় নৌকা ডুবে ৬৪ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা
স্বর্ণের দাম বেড়ে নতুন রেকর্ড
ঢাকাসহ ১৫ অঞ্চলে দুপুরের মধ্যে ঝড়ের আশঙ্কা, সতর্কসংকেত