বাংলাদেশ থেকে নেয়া পুরো ঋণ সুদসহ পরিশোধ করলো শ্রীলঙ্কা
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে দেওয়া ঋণের পুরোটাই সুদসহ পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীলংকা সুদসহ তৃতীয় কিস্তিতে ৫১ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। ২০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ থেকে বাংলাদেশ সুদ পেয়েছে ২৫ মিলিয়ন ডলার।
২০২১ সালের মে মাসে এক বছর মেয়াদে এ ঋণ নিয়েছিল দেশটি। তবে গত বছর অর্থনৈতিক সংকট প্রকট হলে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। সে কারণে কয়েকবার ঋণ পরিশোধে সময় নেয় তারা। চলতি বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।
এর আগে গত ২০ আগস্ট শ্রীলঙ্কা প্রথম কিস্তিত ৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেয়। তারপর ৩১ আগস্ট আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শ্রীলঙ্কার পর্যটন খাত ব্যাপক ক্ষতিতে পড়েছিল। বৈদেশিক বিনিময়ে প্রতিনিয়ত মান হারাতে শুরু করে দেশটির মুদ্রা রুপি। এতে টান পড়ে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতে। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ডলার ধার করে শ্রীলঙ্কা।
‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় এসেছিলেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ডব্লিউ ডি লক্ষ্মণ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে ডলার চেয়ে চিঠি দেন। এরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশ সরকার ২০০ মিলিয়ন ডলার ধার দেয় দেশটিকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এ ডলার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ধার হিসেবে নয়, বরং ডলারের সঙ্গে শ্রীলঙ্কান রুপি অদলবদল বা সোয়াপ করে এই অর্থ দেওয়া হয়। এর বিপরীতে কিছু সুদও পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের কাছে ২০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ শ্রীলঙ্কান রুপি জমা ছিল। বাংলাদেশ এর আগে ১৫ কোটি ডলার সমপরিমাণ রুপি ফেরত দিয়েছে। এবার বাকি ৫ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রুপিও ফেরত দেবে।