চলতি অর্থবছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক
চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন ( জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংক জিডিপির এ পূর্বাভাস দিয়েছে। দেশের অর্থনীতির হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক এ পূর্বাভাস দেয়।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সাড়ে ৭ শতাংশ।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ঢাকাস্থ বিশ্বব্যাংকের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ী শেখ, সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নাড হ্যাভেন, সাবেক প্রধান অর্থনীতবিদ ড. জাহিদ হোসেনসহ অন্যরা।
কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ী শেখ বলেন, বৈশ্বিক অর্থনেতিক মন্দা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও আমদানিতে নিষেধাক্কার কারণে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। তা হতে পারে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। তবে এই অবস্থার উন্নতি হলে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি ভালোভাবে মোকাবিলা করে এগিয়ে গেলেও রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে সময় এসেছে ব্যাংকিং কোম্পানি আইনসহ আর্থিকখাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পলিসি (নীতি) রিফর্ম (সংস্কার) করতে হবে। এসব আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের হতে হবে। কারণ, মুদ্রানীতিতে সুযোগ দেওয়া হলেও সুদের হারে ক্যাপিং থাকায় (বেধে দেওয়ায়) সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এক্সচেঞ্জ রেট মার্কেটে ছেড়ে না দেওয়ায় রেমিট্যান্সও কমতে থাকে। এর ফলে ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি বেড়েই যাচ্ছে। অপরদিকে, মূল্যস্ফীতিও বাংলাদেশে খুব বেশি। তাই এসব ক্ষেত্রে নীতি পুনর্গঠন করা জরুরি।
সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নাড হ্যাভেন বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ডলারের বিনিময় হারের কারণে ব্যালান্স অব পেমেন্টে চাপ পড়েছে।
রেমিট্যান্সে ক্যাপ প্রথা নির্ধারিত থাকলে এই চাপ কমে আসত। বাংলাদেশে আরও বেশি রেমিট্যান্স বাড়ত। এ ছাড়া, দুর্বল রপ্তানি বাজার অনিশ্চয়তার জন্য দায়ী। কারণ, বাংলাদেশের রপ্তানি শুধু ৮৩ শতাংশ তৈরি পোশাক শিল্প নির্ভর হয়ে আছে। তাই রপ্তানিতে বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতামুখী করতে হবে।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে অনেক ধরনের নীতি রয়েছে। তারপরও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। রিজার্ভের চাপ কমাতে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো সমাধান হতে পারে না। কারণ, ভোগ্যপণ্যের আমদানি খুবই কম হয়। এসব আমদানি কমে যাওয়া মানেই তো প্রবৃদ্ধি কমে আসা। আবার যেভাবে বৈশ্বিক অবস্থা চলছে তাতে মূল্যস্ফীতিও কমার কোনো লক্ষণ নেই। রাজস্ব আদায়ও কম হবে। এ জন্য রাজেট ঘাটতি বাড়বে। তাই বিভিন্ন কারণে ধরে নেওয়া হচ্ছে এবার প্রবৃদ্ধি কম হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবেই অর্থনীতি চাপে পড়েছে। তাই পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে।’
জেডএ/এমএমএ/