গম-ভুট্টা চাষিরা পাবে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে হঠাৎ করে অনেক দাম বেড়ে গেছে আটা-ময়দার। এ অবস্থা থেকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক গম ও ভুট্টা উৎপাদন বাড়াতে হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে। গ্রাহক পর্যায়ে এই তহবিল থেকে ঋণের সুদের হার হবে ৪ শতাংশ। সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতহীন এই ঋণ দেওয়া হবে। তবে সিআইপি রিপোর্টে কেউ খেলাপি হলে এই ঋণ সুবিধা পাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) এ ব্যপারে তহবিল গঠন করে একটি নীতিমালা ঘোষণা করেছে। তহবিলের নাম ‘গম ও ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’।
কৃষিঋণ বিভাগের পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদের সই করা সার্কুলারের নীতিমালায় বলা হয়েছে, গম ও ভুট্টার পর্যাপ্ত চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এই দুটি শস্যের উৎপাদনের পরিমাণ যথেষ্ট নয়। এ কারণে দেশে গম, ভুট্টা এবং এগুলো থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রতি বছর গম ও ভুট্টা আমদানি করতে হয়। আর এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। এ পরিস্থিতিতে দেশে গম ও ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে।
হাজার কোটি টাকার তহবিল
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এই স্কিমের অর্থ জোগান দেওয়া হবে। স্কিমের মেয়াদ হবে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রয়োজনে তহবিলের মেয়াদ বাড়ানো হবে
সুদের হার ও মেয়াদ
এই তহবিলের আওতায় ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে কৃষকদের সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে বিতরণ করবে। সুদের হার সকল গ্রাহকের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োজ্য হবে।
কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ফসল উৎপাদনের পঞ্জিকা ও ঋণ পরিশোধ সূচিতে গম ও ভুট্টা চাষের পঞ্জিকা ও পরিশোধ সূচি অনুযায়ী কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণের মেয়াদ নির্ধারিত হবে। ব্যাংকগুলো পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের তারিখ থেকে অনধিক ৮ মাসের আসল এবং সুদ পরিশোধ করবে।
কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও তহবিল বরাদ্দ
স্কিমের আওতায় ঋণসুবিধা পেতে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইচ্ছুক ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি করতে হবে। চুক্তি করা ব্যাংকগুলোকে অর্থবছরভিত্তিক চাহিদার ভিত্তিতে তহবিল বরাদ্দ করা হবে।
স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি কৃষক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ করতে হবে। গম ও ভুট্টা চাষের উপযোগী অঞ্চলে ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের কৃষি, পল্লি ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী ভূমিহীন কৃষক এবং বর্গাচাষিদের এককভাবে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতহীন ঋণ দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, করোনায় প্রভাব না পড়লেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে গম, ভুট্টাসহ সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আবার আমাদের দেশে এই দুটি খাদ্যপণ্য চাহিদার তুলায় উৎপন্ন হয় না। তাই আমদানি করতে হচ্ছে। এতে আমাদের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের উপর চাপ পড়ছে। তাই নতুন গভর্নর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
জেডএ/এমএমএ/
