দেশ-বিদেশে নারী সরবরাহ চক্রের ৬ সদস্য আটক
গ্রেপ্তার সৌরভ, মানসিব হায়াত, চৈতি এবং সাকিব
দেশ ও দেশের বাইরে নারী সরবরাহকারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ।
এ চক্রের প্রধান সামিনা আলম নীলা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ৬ হাজার নারী সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি। এসব নারীর মধ্যে শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়েরাই বেশি।
গ্রেপ্তাররা হলেন— চক্রের প্রধান সামিনা আলম নীলা, তার সহযোগী সৌরভ ইসলাম, চৈতি, তাসনিয়া বেলা, সাকিব আহম্মেদ ও মানসিব হায়াত।
ডিবি জানায়, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নারী সরবরাহ করে আসছে। তারা ঢাকা মহানগরের গুলশান ও বনানীর মতো বিভিন্ন অভিজাত এলাকার ফ্ল্যাট ও হোটেলে নারী সরবরাহ করত। এজন্য সাকিব ও চৈতি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করে সখ্যতা গড়ে তুলত। পরে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সামিনার মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের মেয়ে সরবরাহ করত।
এ বিষয়ে জানাতে বুধবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যলয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, চক্রটি ঢাকা থেকে সারাদেশের বিনোদন স্পটসহ দেশের বাইরে দীর্ঘদিন ধরে নারী সরবরাহ করে আসছিল। নারীর সঙ্গে করে তারা ইয়াবাও সরবরাহ করেছে। এ ছাড়া, চক্রটি ঢাকায় ভুয়া পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালায়।
গ্রেপ্তার সাকিব ও পলাতক চৈতি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাগুলো তত্ত্বাবধায়ন করত বলে জানান ডিবিপ্রধান। এসব বাসায় কাউকে নিয়ে গেলে আত্মীয় বলে পরিচয় দিত তারা।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাকিব অভিজাত এলাকায় চলাফেরা করত এবং নিজেকে সচিবের ছেলে বলে পরিচয় দিত। তার গাড়িতে পতাকা লাগানো ছিল, সঙ্গে বডিগার্ড রাখত। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার বাবা লেখাপড়াই জানে না।
ডিবিপ্রধান বলেন, সাকিব সোনালী নামে এক মেয়ের কাছ থেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সচিবের ছেলে পরিচয়ে এসব প্রতারণা করত বলে জানা গেছে। তদন্তে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, সমাজের গণ্যমান্য বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছে তারা নারী সরবরাহ করত বলে তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। চক্রটি অনেক জায়গায় অসংখ্য নারী সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে। এর মধ্যে আদৌ কেউ বিদেশে পাচার হয়েছে কি-না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া কেউ তাদের নির্ধারিত বাসায় গেলে সহযোগীরা তাদের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে মাসের পর মাস ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করত। পরিবারকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও পেয়েছি।