গ্রাহকের ৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা পলাতক
জালিয়াতির মাধ্যমে চার প্রতিষ্ঠান ও দুই ব্যক্তি গ্রাহকের প্রায় ৬ কোটি টাকা অন্য একটি হিসাবে (অ্যাকাউন্ট) সরিয়ে আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা। অভিনব এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামে অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখায়। এ ঘটনায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম মো. রফিক উদ্দিন কোরাইশী। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার জুনিয়র অফিসার ছিলেন। জুনিয়র অফিসার হলেও ছিলেন বেশ প্রভাবশালী। ঊর্ধ্বতনদের সুনজরে থাকা কোরাইশী বসতেন ডিজিএমের কাছের চেয়ারে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে লালদীঘি করপোরেট শাখায় বদলি করা হলেও সেই শাখায় যাননি এক দিনও। উল্টো প্রভাব খাটিয়ে পাঁচ দিনের মাথায় বদলির আদেশ বাতিল করিয়েছেন।
অগ্রণী ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকের গ্রাহকদের চেক ক্লিয়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করতেন কোরাইশী। এ সময় তিনি ভাউচার পরিবর্তন করে মো. সুমন মিয়া নামে ভুয়া একটি হিসাব খোলেন। সুযোগ বুঝে সেই হিসাবে জমা করতেন গ্রাহকের টাকা। পরে তা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করতেন। এই প্রক্রিয়ায় চার প্রতিষ্ঠান ও দুই ব্যক্তির ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা ‘সুমন মিয়া’ নামের ভুয়া অ্যাকাউন্টে সরিয়েছেন তিনি। প্রাতিষ্ঠানিক চার গ্রাহকের মধ্যে মেয়র চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ডিডি আরএও পিডিবি চট্টগ্রামের ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, গুল আহাম্মদ জুট মিলস লিমিটেড এমপ্লয়িজ পিএফ ফান্ড ট্রাস্টির ৬ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং এম এম জুট মিলসের ২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন এই ব্যাংক কর্মকর্তা। এ ছাড়া দুই ব্যক্তি গ্রাহকের মধ্যে হারুন অর রশিদের ১৯ হাজার এবং ড. শোয়েব আহম্মদের ১ লাখ ১৭ হাজার টাকাও ভুয়া অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেন তিনি। এসব জালিয়াতির ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার সিনিয়র অফিসার মো. জাহিদ হোসেন গত ১৫ মে চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা করেন।
অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কে এম সাহেদ আমিন হোসাইন বলেন, ব্যাংকের টাকা উদ্ধারে আত্মসাৎকারী মো. রফিক উদ্দিন কোরাইশীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতে একটি মানি স্যুট মামলা আছে। এ ছাড়া দুদকও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। গত সপ্তাহে দুদকের শুনানির জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে।