সাঈদীর চিকিৎসককে হত্যার হুমকিদাতা আটক
র্যাব মিডিয়া সেন্টারে তাফসিরুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত
সাঈদীর চিকিৎসককে হত্যার হুমকি দেওয়া তফসিরুল ইসলামকে গতকাল ঝিনাইদহ থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়(বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ডাক্তার এস এম মোস্তফা জামানকে তিনি হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
বিষয়টি অবগত করে ১৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওই চিকিৎসক।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে
বলেন, গত রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারকারী এবং সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া ডা. মোস্তফা জামানকে হত্যার হুমকিদাতা তাফসিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাফসিরুল সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারসহ চিকিৎসক মোস্তফা জামানকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে হত্যার হুমকি প্রদানের ব্যাপারে তথ্য প্রদান করে।
মূলত সে দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে মোস্তাফা জামানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজে বের করে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি দেন।
সেখানে তিনি লিখেন, এই খুনি বাইরে আয় তোকে এবং তোর পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করে আমি আমার জীবনের লক্ষ্য পূরণ করব, 9 mm কিনে রেখেছি। একই সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে ম্যাসেজ দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।
এসব ঘটনার পর ভুক্তভোগী চিকিৎসক মোস্তফা জামান থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে গ্রেপ্তার তাফসিরুল উক্ত মেসেজ শুধু হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুছে ফেলে। কিন্তু তার মোবাইলে উল্লিখিত হত্যার হুমকিসংবলিত মেসেজের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।
র্যাব আরও জানায়, সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি চক্র অপপ্রচার করার চেষ্টা করছে এবং একই সঙ্গে যারা জামায়াত নেতা সাঈদীর চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের হুমকি, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।
জিডিতে ডাক্তার জামান জানান, তিনি বিএসএমএমইউর হৃদরোগ বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ১৩ আগস্ট রাতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ অবস্থায় সেখানে ভর্তি হন। সাঈদী বিএসএমএমইউয়ের হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেশকাত আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।১৪ আগস্ট সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাঈদী মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও ইউটিউবে বিভিন্ন আইডি থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
জিডিতে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে কতিপয় ব্যক্তির আচরণে ভীত ও শঙ্কিত। কয়েকটি ফেসবুক ও ইউটিউব পেজের ব্যবহারকারী এবং তাদের অনুসারীরা যেকোনো সময় আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের খুন-জখমসহ বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে।
এই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও অপরাধীকে ধরতে সক্রিয় হয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান চালিয়ে র্যাব তাকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হয়।