জঙ্গি প্রশিক্ষক নায়েবে আমির মহিবুল্লাহ গ্রেপ্তার: সিটিটিসি
নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নায়েবে আমির মো. মহিবুল্লাহ ওরফে ভোলার শায়েখকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বলছে, নতুন জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিতেন নায়েবে আমির মহিবুল্লাহ ভোলা।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিটিটিসির ইনভেস্টিগেশন টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিন্যাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল এবং একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার শায়েখ মহিবুল্লাহ উগ্রবাদি জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আধ্যাত্মিক নেতার ভূমিকা পালন করছিলেন।
তিনি আরও জানান, বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে তিনি ব্যাপক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন এবং ৫০-৬০ জন তরুণকে তিনি প্রশিক্ষণ দেন। প্রথমদিকে হিজরতকারীদের তিনিই আশ্রয়-বয়ান দিয়ে বিভ্রান্ত করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঢাকা হয়ে পাহাড়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সিটিটিসির হাতে গ্রেপ্তার শুরা সদস্য ডা. শাকের ওরফর শিশির, পলাতক জঙ্গি নেতা শামিন মাহফুজসহ গ্রেপ্তার শায়েখ মহিবুল্লাহ বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে অবস্থিত জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দিস শারক্বীয়ার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যান।
প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে কুকি-চিনদের বিদ্রোহী সংগঠন কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যশানাল ফ্রন্ট)-এর তত্ত্বাবধানে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ চলতো। সেখানে তাদের কেএনএফের প্রধান নাথান বম ও অন্যান্য কুকি-চিন নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে সংগঠনটির নামকরণ করা হয় এবং শুরা কমিটি গঠন করে। গ্রেপ্তার মহিববুল্লাহকে সংগঠনটির নায়েবে আমির হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার মহিববুল্লাহ ক্যাম্পে অবস্থানকালে সন্ধ্যার পর প্রশিক্ষণরত সদস্যদের বয়ান দিতেন। তার বয়ানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গি সদস্যদের জিহাদের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, শায়েখ মহিববুল্লাহ পাহাড়ে কিছুদিন অবস্থান করার পর ঢাকায় চলে আসেন। তিনি শুরা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এনক্রিপ্টেড চ্যাটের মাধ্যমে সমন্বয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে তিনি ব্যাপক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন এবং ৫০-৬০ জন তরুণকে প্রশিক্ষণ দেন।
সিটিটিসি জানায়, জিহাদ সংক্রান্ত বিষয়ে তার নিজস্ব লেখার খসড়া কপিও তার কাছে পাওয়া গেছে। ডা. শাকের সিটিটিসির হাতে গ্রেপ্তারের পর শায়েখ মহিববুল্লাহ নিজেকে আড়াল করতে তার ব্যবহৃত সিম ও মোবাইল ফোন নষ্ট করে ফেলেন।
এই জঙ্গি নেতা ডিবি পুলিশের হাতে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এমএমএ/