চাকরি দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ১১
ঢাকা জেলার সাভারে ‘জেনিথ ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স’ নামক বীমা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে চাকরি দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের চার জন মূল হোতাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (৭ নভেম্বর) র্যাব মিডিয়া সেন্টারের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন— রবিউল আলম (৩৯), মাহমুদুর হাসান (২১), নাঈম হোসেন (১৯), আশ্রাফ আল মুন্না (২০), মিঠুন হাজং (২৫), আসাদ প্রামাণিক (২০), আনিসুর রহমান (২১), সাগর সরকার (২১), আব্দুল হাকিম (২৪), জনি হোসেন (২১) ও আলি আহম্মদ (২০)।
তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, রেজিস্টার, মোবাইল, সিম কার্ড, সিল, ভিজিটিং কার্ড, আইডি কার্ড ও অন্যান্য প্রতারণার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-৪ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা প্রতারণার কথা স্বীকার করে এবং চাকরিপ্রত্যাশী, বেকার, অসহায় ও নিরীহ লোকজনদের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।
চক্রটির প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে র্যাব জানায়, এই চক্র জেনিথ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে। বিজ্ঞাপন দেখে চাকরিপ্রত্যাশী শতশত যুবক ও ছাত্র-ছাত্রীরা যোগাযোগ করলে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে চাকরিপ্রত্যাশী প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিত।
পরে চাকরির নিশ্চয়তা ও মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ১০/২০ হাজার টাকা নিয়ে ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করত। ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ১৮ হাজার ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ইনস্যুরেন্স করাতে প্রলুব্ধ করত।
চাকরি পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে টাকা ফেরত চাইলে তাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি, মারধর এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দিত চক্রটি।
র্যাব জানায়, এই প্রতারক চক্র এর আগেও প্রতারণার দায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার দায়ে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তাররা তাদের ক্লাইন্টদের থেকে বীমা করার জন্য যে পরিমাণ টাকা নিত সেই পরিমাণ টাকা তাদের বীমা একাউন্টে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করতেন।
কেএম/আরএ/