নকল স্বর্ণ বিক্রির নামে প্রতারণা করতেন তারা!
বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নকল সোনার বার, নকল ম্যাগনেটিক পিলার ও কয়েন এবং ভুয়া কাস্টমস্ কর্মকর্তা পরিচয়ধারী প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. বশার মোল্লা, শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু, দ্বীন মোহাম্মদ, মো. জুয়েল শিকদার, কথিত ড. মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ, শেখ আলী আকবর, মো. জামাল ফারাজী, মো. সোহেল শিকদার, মো. বিল্লাল হোসেন ও মো. শাহরিয়ার ইকবাল।
রবিবার (২৩ অক্টোবর ২০২২) রাজধানীর বিমানবন্দর ও দক্ষিণখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে নকল ৪টি সোনার বার, সোনার বার তৈরির মেশিন, তামার তার, তার গলানোর ক্যামিক্যাল, হিউম্যান রাইটসের নকল আইডি কার্ড এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনের নকল আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
তাদের ধরার পর পুলিশ বলছে, প্রতারক চক্রের সদস্যরা একেক জন একেক চরিত্রে অভিনয় করত। ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনারবার সরবরাহ করার কথা বলে সুকৌশলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে ১১ কোটি টাকা আত্বসাৎ করেছে এ প্রতারক চক্র।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায়।
ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, ভাটারা থানার একটি প্রতারণা মামলার তদন্তে একজন মহিলা ভিকটিমের সন্ধান পাওয়া যায়। যিনি গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে সমুদয় টাকা প্রতারকদের হাতে তুলে দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ভাটারা থানা এই মামলাসহ বিমানবন্দর থানার অপর একটি প্রতারণার মামলা তদন্তকালে আসামি ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মো. বশার মোল্লা নিজেকে কাস্টমস ডাইরেক্টরের এপিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে কম দামে স্বর্ণের বার কিনে করে দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে। গ্রেপ্তারকৃত শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু নিজেকে কাস্টমস ডিরেক্টর অ্যাডমিন হিসেবে ক্রেতার সঙ্গে দেখা করে বিশ্বস্ততা অর্জন করে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দ্বীন মোহাম্মদ ও মো. জুয়েল শিকদার স্বর্ণকার হিসেবে নকল সোনারবার তৈরি করে।
গ্রেপ্তারকৃত কথিত ড. মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ নিজেকে কেমিস্ট ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেয়। গ্রেপ্তারকৃত শেখ আলী আকবর নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসেবে পরিচয় দেন।
আসামি মো. জামাল ফারাজী, মো. সোহেল শিকদার, মো. বিল্লাল হোসেন এবং মো. শাহরিয়ার ইকবাল ক্রেতা যোগাড় করে কথিত পরমাণু বিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যেতেন। পরবর্তীকালে তারা ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনারবার পরীক্ষা করে সঠিক আছে মর্মে ভুয়া রির্পোট দিত।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানা, দক্ষিণখান থানা, উত্তরা-পূর্ব থানা, কাশিমপুর থানা ও বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা।
কেএম/এমএমএ/