নকল চাবি দিয়ে ৮ বছরে ৭০০ মোটরসাইকেল চুরি!
রাজধানীতে বিভিন্ন অফিসের সামনে কিংবা আশপাশে যেসব মোটরসাইকেল ও গাড়ি রাখা হয় সেগুলো খেয়াল রেখে নকল চাবি তৈরি করে চুরি করত একটি চক্র। গত ৮ বছরে রাজধানী থেকে এভাবে ৭০০ মোটরসাইকেল চুরি করে বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেছে চক্রটি।
এ জন্য গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল অফিসের সামনে রাখলে দারোয়ানকে বলে রাখা অথবা রাস্তায় যেখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে সেসব জায়গায় মোটরসাইকেল রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর ডেমরা থানা এলাকা ও চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদ ও এবং মো. জিসান আহমেদ ওরফে সম্রাট ।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে ডিসকভার ২টি, পালসার ৩টি, অ্যাপাচি ২টি, প্লাটিনা ১টি, টিভিএস ২টি, সুজুকি ১টি, র্যাপিডো ১টি ও হিরো মোটরসাইকেল ১টি রয়েছে।
শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তরা) বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ দলের বিশেষ অভিযানে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চোর চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলে, সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মোটরসাইকেল চোর চক্রের সদস্য মো. খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি গত আট বছরে ৫০০-৭০০ মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করে চাঁদপুর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করতেন। গ্রেপ্তাররা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পার্কিংয়ে থাকা মোটরসাইকেল কৌশলে মাস্টার চাবি দিয়ে লক খুলে চুরি করে নিয়ে যেত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য সহযোগীদের অবস্থান নির্ণয় করে চাঁদপুর জেলায় অভিযান পরিচালনা করে জিসান আহমেদ ওরফে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যেই চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার আকানিয়া বিশ্বরোড মোড় সংলগ্ন অরুনের গ্যারেজ থেকে ১৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
এদিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর ১৫টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও চোর চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করেছিল ডিবি। গ্রেপ্তারদের দুইজন সেই চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। এর মধ্যে গ্রেপ্তার খালেকের নামে বিভিন্ন থানায় ১৫টি চুরির মামলা রয়েছে বলে জানান ডিবি প্রধান।
ডিবি প্রধান বলেন, গত দুই মাসে ৫০টির মতো প্রাইভেটকার একশর কাছাকাছি মোটরসাইকেল আমরা উদ্ধার করেছি। এর অনেকগুলোরই কোনো কাগজপত্র নেই। নকল কাগজ বানিয়ে মফস্বল এলাকায় এগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের অনুরোধ থাকবে যারা গ্রাম এলাকা থেকে এসব মোটরসাইকেল কেনেন তারা কেনার আগে যেন কাগজপত্র বিআরটিসি থেকে যাচাই করে নেন। না হলে যার কাছ থেকে উদ্ধার করা হবে এসব মোটরসাইকলে তিনিই মামলার আসামি হবেন। যেসব মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে এগুলোর সঠিক কাগজ নিয়ে আসবেন আমরা যাচাই করে তাদেরকে দিয়ে দেব।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এমএমএ/