ঈদে এক কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা, গ্রেপ্তার ৪

রাজধানীর ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে টাকা তৈরির সরঞ্জাম ও ৪০ লাখ টাকার জাল নোটসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, তারা জাল টাকার কারবার করে জেলে যায়, সেখান থেকে এক মুহুরির সহায়তায় জামিন পেয়ে আবারও সেই কারবারে জড়িয়ে পড়ে। আসামিরা সেই মুহুরিকে সঙ্গী বানিয়ে আবারও এ অপকর্ম শুরু।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) ডিএমপির ডিবির উপকমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪০ লাখ জাল টাকাসহ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি পুলিশ বলছে, ঈদ এলেই বেপরোয়া হয়ে পড়ে এসব চক্র। একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও বিভিন্ন আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে এসে আবারও নামে একই অপরাধে।
পুলিশ জানায়, আসন্ন কোরবানির ঈদে চক্রটির টার্গেট ছিল এক কোটি জাল টাকা বাজারে ছড়ানোর। যার মধ্যে অর্ধকোটি ইতোমধ্যে বাজারে ছড়িয়ে গেছে। আসামিদের নাম-মুহুরি আবু বকর রিয়াজ ও রফিকুল ইসলাম শাকিল। আরো ২ জনের নাম গোপন রাখা হয়েছে। শাকিলের সম্বল একটা ল্যাপটপ আর প্রিন্টার। এর সাহায্যেই বানিয়ে চলেছে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট।
তথ্য মতে জানা যায়, শাকিল ৬-৭ বছর ধরে যুক্ত জাল টাকা বানানোর কাজে। একবার খেটেছে জেলও, সেখান থেকে বের হয়ে আবারও শুরু করে একই কাজ। ফটোশপের মাধ্যমে আসল টাকার আদলে তৈরি করে ডিজাইন। আর সুকৌশলে কাগজ জোড়া লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে তৈরি করে রুপালি রঙের নিরাপত্তা সুতা। ঈদ সামনে রেখে টার্গেট ছিল এক কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ার। চক্রটিকে গ্রেপ্তার করা গেলেও পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি জাল টাকার বিস্তার।
শাকিল পুলিশকে জানায়, এক লাখ টাকায় খরচ পড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এবার টার্গেট ছিল কোটির মতো।
এরআগে, শাকিলকে জেল থেকে বের হতে সাহায্য করে আদালতের মুহুরি আবু বকর রিয়াজ। টাকার লোভে আইনের কাজ ছেড়ে তাকে টেনে আনে অপরাধের পথে। মুহুরির পেশা ছেড়ে হয়ে ওঠে জাল টাকা তৈরির কারিগর।
পুলিশ জানায়, মুহুরি আবু বকর রিয়াজ পুলিশকে জানায়, রফিকুল যখন আদালতে হাজিরা দিতে যায়, তখন তার সঙ্গে পরিচয় হয় রিয়াজের। তারপর থেকে একসঙ্গে কাজ শুরু করে, মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আসে।
এসব জাল টাকা কারবারিদের কাছে পৌঁছাতে আর বাজারে ছড়াতে কাজ করে আরও দুজন। এক লাখ টাকার বান্ডিল কারবারিরা কেনে মাত্র আট হাজার টাকায়।
এ বিষয়ে ডিএমপির ডিবির উপকমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান বলেন, লিস্ট নিয়ে ওই পাইকারদের ধরার মাধ্যমে বাজার থেকে জাল টাকা তোলার চেষ্টা করা হবে। এরপর তাদের থেকে লিস্ট নিয়ে রিকভারি করার চেষ্টা করতে যাব।
এ চক্রের অপর এক সক্রিয় সদস্য মো কালাম পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
কেএম/এএস
