সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে হেনোলাক্স গ্রুপের মালিকের সঙ্গে পরিচয় আনিসের

সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে হেনোলাক্স গ্রুপের মালিক নুরুল আমিনের সঙ্গে পরিচয় হয় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যাকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী গাজী আনিসের। বুধবার (৬ জুলাই) কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে মঙ্গলবার আত্মহত্যায় প্রোরোচনার মামলার অভিযোগে আমিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আমিন ও পরিচালক ফাতেমা আমিনকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সোমবার (৪ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় নিজের শরীরে আগুন দেন গাজী আনিস। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আনিসের ভাই বাদি হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, মামলা ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায় ২০১৭ সালে আমিন গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে আনিসের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে সখ্যতা এবং আন্তরিকতা গড়ে ওঠে। গ্রেপ্তরকৃতরা ২০১৮ সালে চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী একটি দেশে গেলে সেখানে স্থানীয় একটি আবাসিক হোটেলে একই সঙ্গে অবস্থান করেন। সেখানে আনিসকে হেনোলাক্স কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য প্ররোচিত করে আসামিরা। প্রথমে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেও পরবর্তীতে রাজি হয় এবং প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। পরবর্তীতে তাদের প্ররোচণায় আনিস আরও ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে।
তিনি বলেন, অধিকাংশ টাকাই ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে ধার নিয়েছিল সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা। বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান এবং বিশ্বাসের কারণে তাদের মধ্যে কোন চুক্তিনামা করা হয়নি। বিনিয়োগ পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করেন আনিস। কিন্তু আসামিরা গড়িমসি করতে থাকে। এক পর্যায়ে আসাদিদের প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতো সেটাও বন্ধ করে দেয় এবং কয়েকবার আসামিদের লোকজন দ্বারা আনিসকে হেনস্তা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন চেষ্টা করে। বর্তমানে লভ্যাংশসহ আনিসের ন্যায্য পাওনা তিন কোটি টাকার অধিক বলে জানা যায়। উক্ত টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ভিকটিম কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের বাসিন্দা। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ঠিকাদারী ব্যবসার পাশাপাশি একটি টেলিকম কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। পরবর্তীতে চাকুরি ছেড়ে কুষ্টিয়ায় গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। ভিকটিম সাহিত্য চর্চা করতেন এবং তার বেশ কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে অনেকর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আসামির সঙ্গেও সাহিত্য চর্চার মাধ্যমেই তার পরিচয় হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
কেএম/
