কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্ব: ছুরিকাঘাতে নিহত ১

কামরাঙ্গীর চরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের দুইগ্রুপের দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে জীবন চৌধুরী (১৯) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রাফি আহমেদ (১৮) ও মো. বিজয় (১৭) নামে আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জীবন। শুক্রবার (২৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচরে আলীনগর কলেজ রোডে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জীবন কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমঘর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। বর্তমানে কামরাঙ্গীরচরে কলেজ রোডের নুরু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
নিহতের বাবা আব্দুল হাকিম জানান, জীবন দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। একটি কার্টন কারাখানায় কাজ করতেন। শুক্রবার রাতে কলেজ রোডে একটি মারামারির ঘটনা শুনতে পাই। তবে কী নিয়ে মারামারি হয়েছে তা জানতে পারিনি। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে জীবন ছিলেন বড়।
নিহত জীবনের বন্ধু মো. নিরব জানান, তারা বেশ কয়েকজন মিলে কলেজ রোডে ক্রিকেট খেলেন। পরে বিজয়সহ মোট আটজন বন্ধু কলেজের ১ নম্বর গেটে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় অন্য এলাকার প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন সেখানে জড়ো হন। সেখানে মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার ঘনটাকে কেন্দ্র করে তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে নাজমুল, হৃদয়, বাবুসহ কয়েকজন মিলে বিজয়, রাফি ও জীবনকে ছুরিকাঘাত করে।
নিরব আরও জানান, এর আগে তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না। তারা দুই গ্রুপ মোবাইল নিয়ে মারামারি করে। বাধা দিলে তাদের উপর হামলা করে। পরে আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
জীবনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছিল। এর মধ্যে জীবন নামে এক যুবক মারা গেছেন। তার পেটে, পাজরে ও পিঠে ছুরিকাঘাত ছিল। আহত রাফির বাম পাজরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। আর বিজয়ের হাতে আঘাত রয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি মোবাইল হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ছুরিকাঘাতে তৃতীয় পক্ষের একজন মারা যায়। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ওই এলাকার নোমান নামে একজনের মোবাইল হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার রুমমেট শামীমকে সন্দেহ করে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে শামীম ও নোমানের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নোমান তার বন্ধু হৃদয় ও বাবুসহ কয়েকজন মিলে শুক্রবার রাতে কলেজ রোডে একটি গলিতে শামীমের ওপরে হামলা করে। এ সময় সেখানে অবস্থান করা এলাকার কয়েকজন ছেলে তাদের মারামারি না করার জন্য বাধা দেয়। এর একপর্যায়ে হৃদয়, বাবু ও নোমান মিলে জীবনসহ তিনজনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান জীবন। এ ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নোমান শামীমসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
এসএন
