ইফতেকার হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চাঞ্চল্যকর শিশু ইফতেকার মালেকুল মাসফি (৭) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। এ ঘটনায় জড়িত ২ শিশুকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শিশু হওয়ায় তাদের নাম প্রকাশ করেনি পিবিআই। হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়। সোমবার (২০ জুন) পিবিআই সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আবু ইউসুফ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পিবিআই জানায়, গতকাল ৫ মার্চ বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ আল্লামা শাহ অছিয়র রহমান হেফজখানা ও এতিমখানা থেকে ৭ বছরের শিশু ইফতেকারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভিক্টিমের মামা মো. মাসুদ খাঁন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ১৮ জুন আল্লামা শাহ অছিয়র রহমান মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানা, চরণদ্বীপ দরবার শরীফের হেফজ বিভাগের সকল ছাত্রদের চট্টগ্রাম পিবিআই'র কার্যালয়ে এনে অভিভাকদের উপস্থিতিতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শিশু আমান (ছদ্মনাম) (১২) ও শিশু জামানকে (ছদ্মনাম) (১২) ইফতেকার হত্যার ঘটনায় জড়িতদের নাম প্রকাশ করে। আসাদ (ছদ্মনাম) (১৫) ও আহাদকে (ছদ্মনাম) (১৫) জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দেয়। স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে তাহাদেরকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসাটি ইফতেকারের বাড়ির পার্শ্বে অবস্থিত। তাকে প্রায় সময় বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার ও নাস্তা পাঠাইতো। খাবার ও নাস্তাগুলো হেফাচতে নেওয়া দুই শিশু খেয়ে ফেলতো। এই বিষয়টি বড় ভাই ইমতিয়াজ মালেকুল মাজেদকে জানায় ইফতেকার। বড় ভাই আসাদকে খাবার খেতে নিষেধ করে এবং মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা জাফর আহাম্মদকে বিষয়টি জানায়। খাবার খেতে নিষেধ করায় ইফতেকারের উপর ক্ষিপ্ত হয় আসাদ।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন ভোরে আমান পড়া দেওয়ার জন্য শিশু আসাদকে খোঁজাখুঁজি করে। তখন সে দোতলার স্টোর রুমের সামনে আহাদকে পাঁয়চারী করতে এবং স্টোর রুমের ভিতরে আসাদকে দেখতে পায়। আমান আরো দেখে ইফতেখারকে কম্বল দিয়ে চেপে ধরে আছে আসাদ। তখন আমানকে ঘটনাস্থল হইতে নিচে চলে যেতে বলে আহাদ। এবং কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়।
পিবিআই'র এই কর্মকর্তা বলেন, স্টোর রুমের দেওয়ালের সাথে ভিকটিমের মাথা স্বজোরে আঘাত করে আসাদ। পরে আহাদ পা চেপে ধরলে ছুরি দিয়ে জবাই করে আসাদ। মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং কম্বল মুড়িয়ে নিচতলার হেফজখানার রুমে চলে যায়।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, আসাদের স্বীকারোক্তি, দেখানো ও সনাক্তমতে ঘটনাস্থল হইতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, কম্বল, ট্রাংক ও লাশ ঢেকে রাখার ব্যবহৃত ব্যানার উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। তাছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান সিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এএজেড
