সফট স্কিল দিয়ে নজর কাড়বেন যেভাবে
কর্মক্ষেত্রে নিজের সফট স্কিল দিয়েই মন জয় করা যায়। প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সব কাজে একজন কর্মীর সফট স্কিল কেরিয়ারকে এগিয়ে নিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। শিক্ষাগত যোগ্যতা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পাসপোর্ট হলেও, উন্নতি নির্ভর করে কর্মদক্ষতার ওপর। আর সফট স্কিল আন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কেরিয়ারকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু অনেকেই সেদিকে নজর দেন না।
যোগাযোগ রক্ষা: যোগাযোগ দক্ষতা প্রতিটি কাজের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি চাকরিই করেন বা উদ্যোক্তাই হোন, আপনাকে গ্রাহক, ক্রেতা, বিক্রেতা, অন্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন, সহকর্মী, নিয়োগকর্তাসহ আরও অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। মৌখিক ও লিখিত-দুই ধরনের যোগাযোগেই ভালো হতে হবে। এখন ই–মেইল ও এসএমএসের মাধ্যমেও অনেক লিখিত যোগাযোগ করতে হয়।
দলগত কাজ: দলগত কাজের মাধ্যমে একটি দলের প্রত্যেক সদস্যের কর্ম দক্ষতাকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সম্মিলিতভাবে ভালো ফল নিশ্চিত করা সম্ভব। দলে কোনো দুর্বল সদস্য থাকলেও দলগতভাবে কাজ করে তাদের কাজ শিখিয়ে নেওয়া যায় এবং তাদের সেরা কাজটি বের করে নেওয়া যায়। কাজের সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করতে পারলে দলের সবাই উৎসাহ নিয়ে কাজ করেন। তাই প্রতিষ্ঠানের উন্নতির লক্ষ্যে দলগতভাবে কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
নেতৃত্বদানের ক্ষমতা: কর্মজীবনের প্রথম দিন থেকেই আপনি পুরো দলের বা প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন, তা আশা না করা হলেও নিয়োগকারীরা অবশ্যই যাচাই করতে চান যে আপনি ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দান করতে পারবেন কি না। যদি আপনি নেতৃত্বদানের ক্ষমতা তৈরি করতে না পারেন, তাহলে আপনি কোনো দল চালাতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিষ্ঠানের উঁচু পদে বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে রাখা হবে না। তাই কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে নেতৃত্বদানের ক্ষমতা তৈরি করুন।
সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা: আপনার প্রতিষ্ঠানে কোনো সমস্যা বা সংকট তৈরি হলে শুধু সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সঙ্গে সম্ভাব্য কিছু সমাধানের কথাও জানান। এতে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে বহুগুণ। কাজের মধ্যে সৃজনশীলতা না থাকলে শুধু গতানুগতিক কাজের মাধ্যমে আপনি অন্য সবার থেকে নিজেকে শ্রেষ্ঠভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন না।
চাপের মধ্যে কাজ করার ক্ষমতা: আপনি যে প্রতিষ্ঠানেই কাজ করুন না কেন, আপনার কাজের চাপ থাকবেই। এটাই বাস্তবতা। আর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও এই দক্ষতাগুলো চাওয়া হয়। আপনাকে একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে হবে এবং প্রতিটি কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে। তাই ভাবতে হবে, আপনি এখন যে কাজটি যত সময় নিয়ে করছেন, তা আরও কম সময়ে দক্ষতার সঙ্গে কীভাবে করা যায়। একসঙ্গে একাধিক কাজ আসলে কোনো কাজটি আগে করবেন, তা ঊর্ধ্বতনের কাছে জেনে নিন। কাজের অগ্রাধিকার বুঝতে শিখুন।
নমনীয় হতে শিখতে হবে: ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে চাইলে আপনাকে যে ধরনের প্রতিষ্ঠানেই কাজ করতে দেওয়া হোক না কেন, যে কাজের দায়িত্বই দেওয়া হোক না কেন বা যে কর্মপরিবেশেই কাজ করতে দেওয়া হোক না কেন, তার সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। নতুনকে স্বাগত জানাতে হবে। কারণ এই নমনীয় বা প্রভাবিত করার দক্ষতার উপরেই নির্ভর করে কোম্পানির উন্নতি।
টাইম ম্যানেজমেন্ট: কোন কাজ কখন করবেন তার সময় ঠিক করাও অত্যন্ত জরুরি। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় টাইম ম্যানেজমেন্ট। কারণ একাধিক কাজ কমসময়ে সঠিক ভাবে করতে পারাটাই যোগ্যতা। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করাটা অত্যন্ত জরুরি। সেই সঙ্গে কম সময়ে নির্ভুল কাজ করতে শিখতে হবে।
কথা রাখার মানসিকতা: কর্মক্ষেত্রে আরেকটি জরুরি বিষয় কথা রাখার মানসিকতা। সংস্থা কর্মক্ষেত্রে যে টার্গেট করে দিয়েছে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। এমন মানসিকতা রাখতে হবে। আপনার জন্য নির্ধারিত কাজ যথা সময়ে শেষ করবেন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবেই প্রতিষ্ঠান আপনার ওপর নির্ভর করতে পারবে।
কেএফ/