৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি আসছে
ছবি সংগৃহিত
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) শিক্ষক নিয়োগে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি আগামী এপ্রিল মাসে প্রকাশ করা হতে পারে। এর অংশ হিসেবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশন অথবা প্রোফাইল হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করেছে।
এনটিআরসিএ সূত্র বলেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশন শেষে শিক্ষকদের শূন্য পদের চাহিদা আহ্বান করা হবে। চাহিদা পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হবে। অনুমোদন পেলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদ ছিল ৬৮ হাজার ৩৯০টি। যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় মাত্র ২৭ হাজার ৭৪ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত সুপারিশ করা সম্ভব হয়। এবারও শূন্য পদের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হবে। কারণ, আগের গণবিজ্ঞপ্তির ৪১ হাজার পদ এখনো ফাঁকা রয়েছে।
২০০৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে। তবে শুরুর ১০ বছর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির হাতে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকার এনটিআরসিএকে সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতাও দেয়। এরপর চারটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ১৩ হাজার ৩১২ জন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ।
এনটিআরসিএ সদস্য (অর্থ ও প্রশাসন) এস এম মাসুদুর রহমান ২৮ জানুয়ারি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে ই-রেজিস্ট্রেশন ও রিকুইজিশন কার্যক্রম শেষ করতে হবে। আশা করছি, আগামী এপ্রিলে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ২৫ জানুয়ারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের সঙ্গে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে বৈঠকে কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএর নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে নতুন পরিপত্র জারি করেছে।
২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এনটিআরসিএ। এতে শূন্য পদ ছিল ৬৮ হাজার ৩৯০টি। এগুলো ছিল এমপিওভুক্ত। গত বছরের ১২ মার্চ ওই গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। পরে পুলিশ ভেরিফিকেশন, বয়স বিবেচনা ও সনদ যাচাই শেষে ২০ সেপ্টেম্বর ২৭ হাজার ৭৪ প্রার্থীকে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়। তাঁদের মধ্যে স্কুল ও কলেজে ১৩ হাজার ৭০৫ জন, মাদ্রাসায় ১১ হাজার ২৭৯, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫১৬, সংযুক্ত স্কুলে ১ হাজার ৫৮৩, সংযুক্ত মাদ্রাসায় ৬২১ জন সুপারিশ পেয়েছিলেন।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির নিয়োগে অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি সহজ করাসহ বেশ কিছু পরিবর্তন আনে এনটিআরসিএ। এতে একজন প্রার্থীর এক আবেদনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া আবেদনের নিচে ‘পছন্দের ৪০টি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পেলে যোগ দেবেন কি না?’ তা পছন্দেরও সুযোগ দেওয়া হয়।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, শূন্যপদের চাহিদা প্রাপ্তি সাপেক্ষে এনটিআরসিএ প্রয়োজনে তিন মাস অন্তর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে প্রাপ্ত শূন্যপদের ভিত্তিতে ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবে এবং নিবন্ধিত প্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তি প্রচারের ১৫ দিন অথবা এনটিআরসিএর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করবেন।
আইনি বাধা কেটে যাওয়ায় এখন বছরে দুটি, সম্ভব হলে তিন মাস অন্তর অন্তর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ ঠিক রাখতে চায় সংস্থাটি।