সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পরিবারের বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে তার মেয়েরও তিনটি ছবি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দুটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিগুলো তার যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালের।
তবে প্রচারিত এসব ছবি প্রেস সচিবের মেয়ের নয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মেয়ের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালের ছবি দাবিতে ভাইরাল ছবিগুলো মূলত এডিট করে তৈরি। মূল ছবিগুলো মিয়া খলিফা নামে এক পর্ণ তারকার।
রিভার্স ইমেজ সার্চে ভাইরাল ছবি দুটির একটি খুঁজে পাওয়া যায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ডটকমের ওয়েবসাইটে। ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ছিল পর্ণ তারকা মিয়া খলিফার মৃত্যুর গুজব নিয়ে। প্রতিবেদনটিতে পাওয়া এ ছবির সঙ্গে প্রেস সচিবের মেয়ের দাবিতে ভাইরাল ছবিটির মিল রয়েছে।
পরে একই পদ্ধতিতে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায় ই-কমার্স কোম্পানি অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টের ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইট দুটিতেই ছবিটি মিয়া খলিফার ছবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে ছবিটি মিয়া খলিফার ছবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া যায়, প্রেস সচিবের মেয়ের ছবি দাবিতে ভাইরাল ছবিটি প্রকৃতপক্ষে মিয়া খলিফার। তার ছবি সম্পাদনা করে তাতে প্রেস সচিবের মেয়ের মুখাবয়ব বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী সংস্থাটি জানায়, রিভার্স ইমেজ সার্চে প্রেস সচিবের মেয়ে দাবিতে দ্বিতীয় ছবিটি পাওয়া যায় পেরু থেকে পরিচালিত স্প্যানিশ ভাষার একটি নিউজ পোর্টালে। ‘এল পপুলার (el popular)’ নামের ওয়েবসাইটটিতে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ মিয়া খলিফাকে নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ছবিটি পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছবিটি মিয়া খলিফার।
একই ছবি পাওয়া যায় পেরুর আরেকটি সংবাদমাধ্যম লা রিপাবলিকা, স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও। এ প্রতিবেদনগুলোতেও ছবিটি মিয়া খলিফার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফলে এটিও নিশ্চিত যে প্রেস সচিবের মেয়ের ছবি দাবিতে ভাইরাল ছবিটি প্রকৃতপক্ষে মিয়া খলিফার। তার ছবি এডিট করে তাতে প্রেস সচিবের মেয়ের মুখাবয়ব বসিয়ে ভুল ও মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।
সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ প্রেস সচিবের মেয়ের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালের ছবি দাবিতে ভাইরাল ছবিগুলোকে ‘বিকৃত’ হিসেবে সাব্যস্ত করছে।