ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা লোপাট
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২৩১টি এটিএম বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি লিমিটেডের হেড অব ক্যাশ সার্ভিস ডিভিশন সৈয়দ আব্দুল আলম। এ ঘটনায় তিনি রবিবার (৬ মার্চ) রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সৈয়দ আব্দুল আলম গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি লিমিটেডের হেড অব ক্যাশ সার্ভিস ডিভিশন হিসেবে গত বছরের অক্টোবর থেকে কর্মরত আছেন। প্রতিনিয়ত কোম্পানির নিজস্ব গাড়িতে রাজধানীসহ অনান্য জেলার এটিএম বুথে বিভিন্ন ব্যাংকের টাকা পৌঁছানো হয় এবং এটিএম বুথে টাকা লোড করা হয়। প্রত্যেক তারিখে অফিসের গার্ডা শিন্ড সিকিউরিটি সার্ভিসের নিয়োগ প্রাপ্ত এটিএম অ্যাটেন্ডেন্টদের নিয়ে এটিএম বুথে টাকা পৌঁছানো হয়। এটিএম এর সম্পূর্ন অপারেশন কার্যক্রম ক্যাশ প্রোসেসিং সেন্টার হতে পরিচালনা করা হয়। ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জানা যায় যে, এটিএম বুথের এবং গাড়িতে বিভিন্ন সময় টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে। এটা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ অবগত ছিল না। পরে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এর সঙ্গে মিটিং এ জানানো হয়। পরে জানা যায় যে, কাফরুল থানা এলাকার মিরপুর সেনপাড়া একটি এটিএম বুথসহ মিরপুর এবং মোহাম্মদপুর এর বিভিন্ন এলাকার ২৩১ বুথ থেকে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা চুরি হয় যা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়।
এজাহারে গার্ডা শিল্ড কোম্পানির দুই ক্যাশ অ্যাটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলা হয় বিভিন্ন সময় এটিএম বুথ ও গাড়ি হতে ডিউটিরত অবস্থায় কোম্পানির টাকা (ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড দ্বারা প্রদত্ত) চুরি করে। ব্যক্তিদ্বয় হলেন, তাহমিদ উদ্দিন পাঠান সোহান (২৭) (আইডি -০০৮৮), আব্দুর রহমান বিশ্বাস (৩২) (আইডি ০১১২)। তারা গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ কাজ করে আসছিল।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় অসিম কুমার সোম, সিনিয়র ম্যানেজার ও ক্যাশ সল্যুশন সার্ভিসের আরো প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন এই চুরির সাথে জড়িত আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এজাহারে বলা হয়, অসিম কুমার সোম এই ঘটনাটি প্রকাশ পাবার সঙ্গে সঙ্গে অফিস কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই নিজ উদ্যোগে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যান। মূলত তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে কাফরুল থানার ডিউটি রত পুলিশ কর্মকর্তা (সাব ইন্সপেক্টর) মো. তারা মিয়া ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা চুরি হয়ে যাওয়ার অভিযোগে একটি মামলা থানায় দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে বিস্তারিত পরে বলা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আজও এটিএম বুথ থেকে টাকা লোপাটের অভিযোগে ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ চক্রটি একটি বেসরকারি ব্যাংকের ২ শতাধিক এটিএম বুথ মেশিন থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিল। নিজেরা নিজেদের প্রশিক্ষণ দিত। বেশ কিছুদিন তারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, এটিএম বুথের টাকা লোপাট ও বিভিন্ন অপরাধ দমনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে আমার পরামর্শ হলো এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সাথে সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্রয় নেওয়া। তাহলে অনেকটাই এ ধরনের অপরাধ অনেকটাই কমে আসবে।
কেএম/এএস