গণটিকাকে কেন্দ্র করে ঢাকা উৎসবের নগরী
গণটিকা প্রদানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ঢাকা আজ উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সর্বত্র মানুষের সয়লাব। দলবেঁধে নারী-পুরুষরা ছুটছেন টিকা গ্রহণের উদ্দেশ্যে। কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘ সারি মানুষের।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার চাঁদ হাউজিং উদ্যান, বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন আল্লাহ করিম মসজিদ মোড়, ঢাকা উদ্যানের প্রবেশমুখসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সর্বত্র মানুষের উপচে পড়া ভিড়। তাদের বেশিরভাগই কর্মজীবী, রিকশাচালক, নির্মল দরিদ্র মানুষজন।
গার্মেন্টসকর্মীদের একটি বড় অংশ আজ গণটিকা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন টিকা নিতে। এদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন গার্মেন্টস থেকে তাদের টিকা দেওয়া হয়নি। আবার কোথাও টিকা নিতে যেতে চাইলে ছুটি দেওয়া হয়নি। যার ফলে তারা আগে টিকা নিতে পারেননি। প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার শেষ দিন হওয়ায় আজকে গার্মেন্টস থেকে জোরপূর্বক ছুটি নিয়ে এসেছেন অনেকে।
মোহাম্মদপুরের চাঁদ হাউজিংয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে অস্থায়ী টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সকাল থেকেই সেখানে দীর্ঘ সারি মানুষের। নারী-পুরুষরা আলাদা সারি দেখা গেছে। তবে পুরুষের চেয়ে নারীদের লাইন ছিল অনেক দীর্ঘ।
এই কেন্দ্রে কথা হয় টিকা নিতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে। যারা টিকা নেওয়ার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন।
তাদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সামির মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রায় দু'ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। শেষদিনে কেন টিকা নিতে আসলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সামির বলেন, 'গত আগস্ট মাসে রেজিস্ট্রেশন করে ছিলাম টিকার জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত মেসেজ বা এসএমএস আসেনি। তাই আজকে বাধ্য হয়ে এই গণটিকার লাইনে দাঁড়ালাম। যেহেতু প্রথম ডোজ দেওয়ার শেষ দিন সে কারণে কোনো বিকল্প ছিল না।'
একই কথা জানালেন আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তালহা। বললেন, রেজিস্ট্রেশন করার পরও এসএমএস আসেনি। যার ফলে এতদিন টিকা দিতে পারেননি।
ইকরা নামে গার্মেন্টসকর্মী জানান, 'আমাদের অফিস থেকে ছাড়ে না, ছুটি দেয় না, এ কারণে এতদিন টিকা দিতে পারিনি। সকাল ৯টার দিকে এসেছি, এখন দুপুর ১টা, এখনও লাইনে আছি।
ইসমোতারা নামে এক মহিলা জানান, তার আইডি কার্ড ছিল না, তাই এতদিন টিকা নিতে পারেননি। এ কারণে আজকে এই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
গার্মেন্টসকর্মী হাজারা জানান, এতদিন তারা টিকার বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। তা ছাড়া আইডি কার্ডের সমস্যা ছিল, এ কারণে দেওয়া হয়নি। সরকার যখন বলল আজকেই শেষ দিন এরপর আর টিকা দেওয়া যাবে না, তখন লাইনে এসে দাঁড়ালাম।
তিনি বলেন, সকাল ৯টায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
আরেক গার্মেন্টসকর্মী রুবী বেগম বলেন, 'এতদিন মনে করেছিলাম টিকা ভুয়া। কিন্তু সরকার বলল ঠিকা না দিলে কাজে যেতে পারব না, চাকরি করতে পারব না। সেই ভয়ে আজ টিকা নিতে আসলাম।'
মাদ্রাসাছাত্র তৈয়ব হাসান জানান, তিনি এতদিন মাদ্রাসা থেকে ছুটি পাননি বলে টিকা দিতে পারেনি। চাপের কারণে আজ ছুটি দিয়েছে বলে আজ টিকা দিতে এসেছি।
এনএইচবি/টিটি