জাল সনদে চাকরি, টাকা চাওয়ায় সহকর্মীকে হত্যা
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় ‘হাজী বাড়ি প্লান্ট’ নামীয় হাঁস, মুরগির খামারে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকরি করতেন রবিউল আলম হৃদয়। তবে নিজের সনদে নয়, বড় ভাই শফিকুল আলম জয়ের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পাসের সনদপত্র দিয়ে চাকরি নেন তিনি। বিষয়টি জেনে যায় হৃদয়ের সহকর্মী জীবন চন্দ্র বিশ্বাস। এর জন্য হৃদয়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন জীবন চন্দ্র। টাকা না দিলে সনদ জালের বিষয়টি ফাঁস করে দেবেন বলে হুমকি দিলে হৃদয় তাকে হত্যা করেন। সোমবার রাতে নেত্রকোনা সদর থানার হোসেনপুর এলাকা থেকে রবিউল আলম হৃদয়কে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মালিবাগে সিআইডি সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মৃতের ভাই সুমন চন্দ্র বিশ্বাস (২৩), মো. শফিকুল আলম জয়ের (২৮) বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মামলা হয়।
গ্রেপ্তার হৃদয়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মুক্তা ধর বলেন, তিনি তার বড় ভাই মো. শফিকুল আলম জয়ের সনদপত্র নিজের নামে করে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অবস্থিত 'এজিস সিকিউরিটি ফোর্স' কোম্পানিতে ২১ দিনের সিকিউরিটি গার্ডের কোর্স করে ময়মনসিংহের ভালুকা থানার 'দি অ্যাপ্যারেলস ইস্ট জামিরদিয়া' পোশাক কারখানায় প্রায় ৮ মাস কাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় ‘হাজী বাড়ি প্লান্ট’ নামীয় হাঁস, মুরগীর খামারের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে প্রায় ২ মাস ধরে কাজ করে আসছিলেন। ওই খামারেই ভিকটিম জীবন চন্দ্র বিশ্বাসের সঙ্গে কাজের সুবাদে তার পরিচয় হয়। কোম্পানির ৪ রুমের ভাড়া করা বাসায় তারা দু’জন প্রায় ২ মাস ধরে একই রুমে বসবাস করে আসছিলেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন ১০ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাত প্রায় সাড়ে ৭টার সময় জীবন চন্দ্র আসামি হৃদয়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে হৃদয় সনদ জাল করে চাকরি নিয়েছেন তা ফাঁস করে দেবেন বলে হুমকি দেন জীবন। এতে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, একপর্যায়ে হৃদয় ঘরে থাকা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি সহকর্মী জীবন চন্দ্র বিশ্বাসের পেটে ঢুকিয়ে দিলে তিনি গুরুতর জখম হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য কাছের একটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সহকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার একমাত্র আসামিকে দ্রুততম সময়ে অবস্থান শনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এটি বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/আরএ/