মসজিদ থেকে জুতা চুরি, পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা, শেষমেশ ধরা যুবক
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পান্থপথে চুরির পর পিস্তল বের করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা এক যুবককে আটক করেছে পথচারী ও পুলিশ। আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে এসআইবিএল ফাউন্ডেশন হাসপাতালের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
আটক যুবকের নাম ইবতেশাম রহমান আলফি (১৮)। তিনি মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা এবং নিজেকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন। ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) রাজিব গায়েন গণমাধ্যমকে জানান, আলফির কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে, যা দেখতে আসল মনে হলেও এতে কোনো গুলি ছিল না। তবে আলফির দাবি, এটি আসলে খেলনা পিস্তল এবং টাকার প্রয়োজনে তিনি চুরি করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় জোহরের নামাজের পর। এসআইবিএল ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ভেতরে থাকা মসজিদে নামাজ পড়তে যান কয়েকজন যুবক। নামাজ শেষে বেরিয়ে তারা দেখতে পান, তাদের একজনের জুতোজোড়া নেই। সন্দেহ হওয়ায় তারা হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেন এবং ফুটেজে এক যুবককে জুতা চুরি করতে দেখা যায়।
সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ওই যুবককে শনাক্ত করার পর তারা বাইরে এসে দেখতে পান ফুটেজে দেখা যুবকের মতো একজন কাছেই দাঁড়িয়ে আছে। তখন তারা তাকে চ্যালেঞ্জ করলে সে কোমর থেকে একটি পিস্তল বের করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। এতে উপস্থিত যুবকরা একটু পিছু হটলেও পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়, যখন একজন পথচারী রিকশায় যাচ্ছিলেন এবং চিৎকার করে বলেন, "ছিনতাইকারী!"
তার চিৎকারে আশপাশের মানুষজন সতর্ক হয়ে যায়, যার ফলে আতঙ্কিত হয়ে ওই যুবক পান্থপথ ট্রাফিক পুলিশ বক্সের দিকে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ট্রাফিক পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর খবির হোসেন দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখান এবং পথচারীদের সহায়তায় যুবকটিকে আটকের চেষ্টা করেন।
খবির হোসেন জানান, 'আমি তখন ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে কিছু যানবাহনকে জরিমানা করছিলাম। হঠাৎ দেখি, পথচারীরা পিস্তলসহ এক যুবককে ধরার চেষ্টা করছে। আমি তাকে আটকানোর চেষ্টা করি, কিন্তু সে দৌড়ে পালাতে চায় এবং পিস্তল ছাড়তে চায় না। এতে স্থানীয় ও পথচারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় এবং আমিও কিছুটা আহত হই।'
অবশেষে পথচারী ও পুলিশের সহায়তায় ইবতেশাম রহমান আলফিকে আটক করে পান্থপথ ট্রাফিক পুলিশ বক্সে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে তাকে কলাবাগান থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান জানান, উদ্ধারকৃত পিস্তলটি খেলনা হলেও দেখতে হুবহু আসল পিস্তলের মতো। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পিস্তলের বিষয়ে আরও তদন্ত করা হবে। আটক যুবকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।