বাসায় ঢুকে দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে হত্যা, প্রকৌশলীসহ ৩ জন আটক
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এই বাড়িতেই (ইনসটে নিহত তানজিল জাহান ইসলাম তামিম)। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর হাতিরঝিলে মহানগর প্রজেক্ট আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে জমির মালিক তানজিল জাহান ইসলাম তামিমকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একটি ডেভেলপার কোম্পানির লোকজনের বিরুদ্ধে। নিহত তামিম বেসরকারি টেলিভিশন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে এক প্রকৌশলীসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে রামপুরা মহানগর প্রজেক্টের ৪ নম্বর রোডের ডি ব্লকের বাড়ির ৮ তলার একটি ফ্লাটে এই ঘটনাটি ঘটে। অচেতন অবস্থায় স্বজনরা তাকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়িটির জমিদাতা হলেন নিহত তামিমের বাবাসহ মোট ৩ জন। তাদের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জের ধরে বৃহস্পতিবার সকালে বাসার ভেতরে ঢোকে ডেভলপারের লোকজন। সেখানে এক পর্যায় তামিমকে মারধর করে ও বুকে উপর্যুপরি কিলঘুষি মারতে থাকে, গলা টিপে ধরে। পরবর্তীতে তারা চলে যায়। তখন অসুস্থ্যবোধ করলে স্বজনরা তাকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি জানান, ঘটনার পরপরই সেখান থেকে এক ইঞ্জিনিয়ারসহ ৩ জনকে আটক করা হয়। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত তামিমের মামা মাসুদ করিম জানান, চুয়েট থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন তামিম। পরবর্তীতে যোগ দেন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগে। মহানগর প্রজেক্টের বাড়িটির ৭ তলায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন তিনি ও তার পরিবার। প্লিজেন্ট প্রোপ্রার্টিজ (প্রা.) লিমিটেড ডেভলপার কোম্পানি তাদের মোট ৫টি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও কিছুতেই এটি বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। এ নিয়ে বছর খানেক আগে একটি মামলাও করা হয়।
তিনি জানান, বুধবার ডেভলপার কোম্পানির সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়, ৮ম তলায় ২টি ফ্ল্যাট তাদের দেওয়ার কথা জানানো হয়। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে ৮ম তলার ফ্ল্যাটে লেবার দিয়ে কিছু কাজ করাচ্ছিলেন তামিম৷ তখন ডেভলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ মির্জা, ফ্ল্যাট মালিক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মামুন, ডেভলপার কোম্পানির কর্ণধার বিএনপি নেতা রবিউল আলম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা চালান। তামিমকে মারধর করতে থাকেন তারা। চিৎকার শুনে তামিমের বড় ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে আসলে তাকেও মারধর করে এক পর্যায়ে চলে যায় তারা। তখন ৯৯৯ এ কল করে সহায়তা চান ভুক্তভোগীরা। এর মধ্যে ভীষণ অসুস্থ্যবোধ করতে থাকেন তামিম। সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় মনোয়ারা হাসপাতালে। তবে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।