শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বিশেষজ্ঞদের মতামত

ঐতিহ্য বজায় রেখে পুরান ঢাকার পুনঃউন্নয়ন সম্ভব

সেমিনারে বক্তারা

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজস্ব ঐতিহ্যের একটি সংজ্ঞা রয়েছে, যা আমাদের দেশে নেই। তাই ঐতিহ্য রক্ষার জন্য কাজ করা যেমন জরুরি তেমনি সেটির সংজ্ঞা নির্ধারণ করাও জরুরি। ঐতিহ্য বজায় রেখে পুরান ঢাকার পুনঃউন্নয়ন সম্ভব। আর তাই পুনঃউন্নয়ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই ঐতিহ্য ধরে রেখেই পুরান ঢাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করতে হবে।

শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও পুনঃউন্নয়ন: কর্তৃপক্ষের করণীয় ও বিশেষজ্ঞ ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

ঢাকায় কর্মরত সেবা খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে ডুরার সভাপতি মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডুরার সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিক।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ ভবনমালিক বলেন বাবার বাড়ির ঐতিহ্য সংরক্ষণ করবেন। ভালো কথা, তবে আমি কী পেলাম? বর্তমানে ইতিহাসের বিবর্তনে পুরান ঢাকার অনেক ঐতিহ্য হুমকির মুখে। এগুলো রক্ষায় রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা দরকার। আটটি থানা আর ২৩টি এলাকা জুড়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে পুরান ঢাকা। এই এলাকার উন্নয়ন ও পরিবর্তন ছাড়া রাজধানীর পরিবর্তন সম্ভব নয়। অথচ এই জায়গাটুকুতে জনঘনত্ব এতো বেশি! যেটি ভাবা যায় না। পুরান ঢাকার বড় সমস্যা হচ্ছে, পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন, ছোট আকারের কক্ষ, পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা না থাকা এবং ঘিঞ্জি পরিবেশ। এছাড়াও পর্যাপ্ত রাস্তার অভাব, হকারদের রাস্তা দখলে রাখাতো রয়েছেই। আরও রয়েছে পানি ব্যবস্থাপনা ও ড্রেনেজ সমস্যা।

তিনি আরও বলেন, পুরান ঢাকা ভূমিকম্পের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সরু রাস্তা এবং দুর্বল ভবন কাঠামোর কারণে উদ্ধার অভিযানের সুযোগ নেই। এসব কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও অতিরিক্ত ঝুঁকি থাকে। এই জন্য নির্মাণ বিধিমালা মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। যদিও এটি পুরান ঢাকায় সম্ভব নয়। তাই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্লটগুলোকে একত্রিত করে ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে আলাদা বিধিমালা করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, নতুন বিধিমালায় হ্যারিটেজ রক্ষার ক্ষেত্রেও ভাবতে হবে। সড়ক, উন্মুক্ত স্থান, জলাশয়, হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মালিককে বাড়তি সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। ভূমি মালিকদের প্রণোদনা বা অন্যত্র জমির ব্যবস্থা করে পুনঃউন্নয়ন করা যেতে পারে।’

গবেষণাপত্রে নতুন ড্যাপে পুরান ঢাকার জন্য বিশেষ কিছু সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়, যারমধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা সংরক্ষণ করে পর্যটন এবং বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করা, বুড়িগঙ্গা নদীকে ঘিরে সংস্কৃতি বলয় গড়ে তোলা, ভূমির পুনঃউন্নয়ন করে মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা, রাসায়নিক গুদাম পর্যায়ক্রমে সরিয়ে সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরে জনপরিসর গড়ে তোলা ইত্যাদি।

গবেষণাপত্রে পুরান ঢাকার নগর পুনঃউন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়, পুনঃউন্নয়ন করা হলে যাতে এলাকার সাধারণ মানুষ সুবিধাভোগী হয়, অবশ্যই এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনময় সভা করা, রাজউক কর্তৃক আরবান রিডেবেলপমেন্ট বিষয়ক করা খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা, প্রকল্পভুক্ত এলাকাসমূহে ঐতিহ্যগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সংরক্ষণ করে স্থানীয় বৈশিষ্ট বজায় রেখে নগর পুনঃউন্নয়ন নিশ্চিত করা, সংশ্লিষ্ট সেবাখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে, সড়ক নির্মাণ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করতে হবে, কয়েকটি এলাকায় ৬০ ফিট প্রশস্থ রাস্তা করা, উন্নয়ন প্রকল্প চলাকালে প্রকল্পভুক্ত জনগণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আবাসন সুবিধা প্রদানকল্পে প্রকল্প এলাকার সন্নিকটে সুবিধাজনক স্থানে আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া।

গবেষণাপত্রে কর্তৃপক্ষের কিছু দায়িত্বের মধ্যে সরকার/কর্তৃপক্ষ/ দাতা সংস্থা কর্তৃক প্রাথমিক অর্থায়ন, প্রধান সড়ক, স্বাস্থ্যসেবা, স্কুল উপযোগী করে তোলা এবং স্থানীয় সরকারের অধীনে কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, পার্ক, এসটি, পথচারী/সাইকেল লেনের উন্নয়ন করার বিষয় উল্লেখ করা হয়।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকটি ছোট বাড়ি নিয়ে একটি ব্লক হতে পারে। নিজেরা সম্মত হলে তিনটি পদ্ধতিতে এটি করা যেতে পারে। এরমধ্যে রাজউকের সহযোগিতায় ভূমি মালিক সমিতির নিজস্ব উদ্যোগের মাধ্যমে, রাজউকের সহযোগিতায় ভূমি মালিক সমিতির সাথে ডেভেলপার কোম্পানির চুক্তির মাধ্যমে এবং ভূমি মালিক সমিতির সাথে রাজউকের চুক্তির মাধ্যমে এটি হতে পারে। তবে এই পুনঃউন্নয়নে কয়েকটি চ্যালেঞ্জেও রয়েছে।’

সেমিনারে ঐতিহ্যের সংজ্ঞা আগে নির্ধারণ করতে হবে বলে মত দেন আরবান স্টাডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম। তিনি বলেন, একদিকে ঐতিহ্যের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে জরাজীর্ণ ভবনের কথা বলা হচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনের কথা বলে করোনার সময় অনেক ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। ২০০৯ সালের সরকারি তালিকা অনুযায়ী পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী ভবন ৯৪টি। আবার ২০১৭ সালের তালিকা অনুযায়ী ৭৫টি, কিন্তু ভবন রয়েছে এক হাজার ৮৩১টি। তাই সেই তালিকা ঠিক করা উচিত।

ভবন না ভেঙেও সংরক্ষণ করা যায় জানিয়ে তাইমুর ইসলাম বলেন, সমন্বিতভাবে কাজ না করলে এই ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা যাবে না। রাজউক তার মতো ভাবছে, সিটি করপোরেশন তার মতো ভাবছে এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তার মতো ভাবছে। প্যারিস, লন্ডনের মতো অনেক শহর আছে যেখানে আধুনিকতার সব আছে পুরাতন কাঠামোকে রেখে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, ‘পুরান ঢাকায় প্রধান সমস্যা যানজট। তাই এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ জরুরি। এছাড়া আমরা দেখি কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার পাশে আট দশ তলা ভবন কিভাবে হয়? তারা কিভাবে অনুমোদন নিচ্ছেন? এসব বিষয়ে ভাবার সময় এসেছে।’

ঐতিহ্য বিশেষজ্ঞ স্থপতি মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শুধু ভবন নয়, পুরান ঢাকার সংকীর্ণ রাস্তাও তার ঐতিহ্য। সবসময় রাস্তা ভেঙে বড় করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়। সেখানে ফায়ার সার্ভিস বা অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে পারবে না, তা না। সেসব গাড়ি প্রবেশের জন্য কাস্টমাইজড যানবাহনের বিষয়ও ভাবার প্রয়োজন আছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, ‘নগর উন্নয়নের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ নেই। এমন হলে সঠিক পরিকল্পনা কিভাবে আসবে। এক দুইজন পরিকল্পনাবিদ দিয়ে এটি সম্ভব না। সব সেবা প্রতিষ্ঠানের উচিত পরিকল্পনাবিদদের নিয়ে কাজ করা।’

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের অ্যালামনাই আয়েশা সাঈদ বলেন, ‘পুরান ঢাকাকে পরিবর্তন করতে হলে শুরুতেই কমিউনিটিকে এক করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা যতই বলি সিঙ্গাপুর বা কুয়ালালামপুর করে ফেলবো সেটি সম্ভব না। তবে আমাদের যা আছে তা দিয়ে নিজেদের মতো করে অবশ্যই পুনঃউন্নয়ন সম্ভব।’

সভাপতির বক্তব্যে ডুরা সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্র্টার্স অ্যাসোসিয়েশন পেশাগত সাংবাদিকতায় মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সেবাখাতের সংবাদের ক্ষেত্রে যাতে সঠিক তথ্য মানুষ জানতে পারেন, সে জন্য বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আজকে পুরান ঢাকার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞ আলোচকদের মূল্যায়ন এবং পরামর্শ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান মূল্যায়ন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির স্বাগত বক্তব্যের পর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন ডুরার সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শামীম, অর্থ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লা সাজু, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক বারেক হোসেন।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ডুরার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, নির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম রনি, সানাউল হক সানি, মুসা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়শ্রী ভাদুড়ী, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় মামুন, প্রচার ও দফতর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম।

এসএম/আরএ

Header Ad

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরলেন আরও ৮২ জন বাংলাদেশি। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাত ১১টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরেন তারা। তাদের মধ্যে ৭৬ জন সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ে ও ছয়জন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার অর্থায়নে দেশে ফিরেন। এ নিয়ে ১১টি ফ্লাইটে এখন পর্যন্ত ৬৯৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত, লেবানন এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে আসা ৮২ বাংলাদেশির মধ্যে ৭৬ জন লেবাননের বৈরতে বাংলাদেশ দূতাবাসে রেজিষ্ট্রেশন করেন। আর বাকি ছয়জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায়। এ পর্যন্ত ১১টি ফ্লাইটে ৬৯৭ জন বাংলাদেশিকে লেবানন থেকে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন করা এসব বাংলাদেশিকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা।

এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলেন ও তাদের খোঁজ-খবর নেন। এ পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি বোমা হামলায় নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, লেবাননে চলমান সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থায় যতজন প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসতে ইচ্ছুক তাদের সবাইকে সরকার রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে ফেরত আনার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী গাড়িবহরে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাধিক যাত্রীবাহী গাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়, যার ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছের কুররম অঞ্চলে এই হামলা ঘটে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মহসিন নকভি নিশ্চিত করেছেন যে, হামলার স্থানটি আফগান সীমান্তের কাছাকাছি। জেলা পুলিশ এবং স্থানীয় হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মকর্তা, নারী ও শিশুরাও রয়েছে। তাদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পুলিশ এখনো আততায়ীদের খুঁজে বের করার জন্য অভিযান শুরু করেছে। কুররম জেলা সম্প্রতি শিয়া এবং সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রদায়গত সহিংসতার জন্য পরিচিত। তবে এই হামলার দায় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখনও স্বীকার করেনি।

এই অঞ্চলে সম্প্রতি জমি নিয়ে বিতর্ক এবং সশস্ত্র সংঘর্ষের কারণে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আগস্ট এবং অক্টোবর মাসে জমি নিয়ে বিতর্কে সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলেছিল এবং এতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এছাড়া, গত কয়েক সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানি সেনাদের মধ্যে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে পাকিস্তানজুড়ে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় ৬০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতার দায় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সংগঠনটি স্বীকার করেছে। এই গোষ্ঠীকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জাতিসংঘ তালিকাভুক্ত করেছে এবং ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে যে, আফগানিস্তানের তালেবান শাসনের অধীনে থাকা ‘অভয়াঞ্চল’ থেকে টিটিপি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ বালোচ বৃহস্পতিবার বলেন, তাদের সরকারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, আফগান ভূখণ্ডে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আফগান তালেবান কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তালেবান নেতারা দাবি করেছেন, তারা টিটিপি বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেন না এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার জন্য কাউকে সুযোগও দেন না।

এই হামলার ঘটনা পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের তীব্রতার একটি নতুন উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Header Ad

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে পদাধিকারবলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র এ কমিটির সদস্য থাকবে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা হলেন- মো. মাহিন সরকার, রশিদুল ইসলাম রিফাত, নুসরাত তাবাসসুম, লুৎফর রহমান, আহনাফ সাঈদ খান, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), তারিকুল ইসলাম, মো. মেহেরাব হোসেন সিফাত, আসাদুল্লাহ আল গালিব, মোহাম্মদ রাকিব, সিনথিয়া জাহিন আয়েশা, আসাদ বিন রনি, নাইম আবেদীন, মাহমুদা সুলতানা রিমি, ইব্রাহিম নিরব, রাসেল আহমেদ, রফিকুল ইসলাম আইনী ও মুঈনুল ইসলাম।

১৮ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির তালিকা। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সেই অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলন পরিচালনায় ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্যের করা হয়। ২২ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে হাসনাত আবদুল্লাহকে আহ্বায়ক, আরিফ সোহেলকে সদস্যসচিব, আবদুল হান্নান মাসউদকে মুখ্য সংগঠক ও উমামা ফাতেমাকে মুখপাত্র করা হয়। এই কমিটি দিয়ে এতদিন সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার