কাল থেকে সাধারণ যাত্রীদের চলাচল শুরু
আজ মেট্রোরেলের উত্তরা-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত
আজ শনিবার (০৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরা-মতিঝিল রুটে মেট্রো রেল চলাচল উদ্বোধন করবেন। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, তিনি দুপুর ২টায় আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে পৌঁছবেন । আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেলে চড়ে যাবেন মতিঝিল। এর মধ্য দিয়ে মতিঝিল পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হবে।
মতিঝিলে এমআরটি লাইন ৫-এর নির্মাণকাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে মতিঝিলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি।
উত্তরা-মতিঝিল পুরো পথে মেট্রোরেল চালু হওয়ায় এর প্রকৃত সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেট্রোরেল সফল হলে সড়কে ছোট বা ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল কিছুটা কমবে।
একই সঙ্গে জীবাশ্ম ও তরল জ্বালানির ব্যবহার বহুলাংশে কমে যাবে। ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত ব্যবস্থায় কিছুটা গতিও যোগ হবে। এতে নগরবাসীর কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হবে। কিছু এলাকায় যানজট কমবে। যানজটের কারণে যে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হচ্ছে তার রাশ টানা যাবে।
গত ১০ মাস উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অনেকটা শখের পরিবহন হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছে মেট্রোরেল। যতটা না প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি চোখে দেখতে মেট্রোতে চড়েছে লাখো যাত্রী। ১০ মিনিটের ট্রেন ভ্রমণের জন্য দু-তিন ঘণ্টাও লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল মানুষ। মেট্রোর সেই দিন আজ থেকে শেষ হতে যাচ্ছে। আগামীকাল রোববার থেকে মেট্রো চলবে গণপরিবহনের মতো।
প্রথম ধাপে উত্তরা-আগারগাঁও ট্রেন চললেও এর কোনো প্রভাব ছিল না শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থায়। দ্বিতীয় ধাপে মেট্রোরেল ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এলাকা মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, পল্টন ও মতিঝিলকে এক রেখায় যুক্ত করবে। সরাসরি মেট্রোরেলের প্রভাব বোঝা যাবে এবার। এরই মধ্য দিয়ে ঢাকার মূল গণপরিবহন ব্যবস্থায় যুক্ত হবে মেট্রোরেল।
আগামীকাল রোববার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রো। তবে প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও সব স্টেশন একসঙ্গে চালু হচ্ছে না। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশনই এখন চালু আছে। মতিঝিল অংশে স্টেশন আছে সাতটি। এই পথে শুরুতে ফার্মগেট, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে ট্রেন থামবে।
বাকি থাকবে বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন। এসব স্টেশন ধাপে ধাপে চালু করা হবে। আবার মতিঝিল পর্যন্ত আপাতত সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। আস্তে আস্তে এই পথে ট্রেন চালানোর সময় বাড়ানো হবে। যদিও আগারগাঁও পর্যন্ত যেভাবে ট্রেন চলছিল সেভাবেই চলবে।
মেট্রো রেল পরিচালনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, প্রথম ধাপের মতোই পরিচালন ও পরীক্ষা—এই তত্ত্বে পুরো পথ চালু করা হবে। ধীরে ধীরে যাত্রীদের অভ্যাস তৈরি হলে আস্তে আস্তে সময় ও স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেট্রো রেল পুরোপুরি চালু হওয়ায় ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। ছয়টি কোচসংবলিত প্রতিটি একমুখী ট্রেন প্রতিবারে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।
