আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে কমলাপুর-নারায়ণগঞ্জ মেট্রোরেল
আলোর মুখ দেখছে কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল (এমআরটি-৪)। বৃহস্পতিবার (৪ মে) দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ৩২ হাজার কোটি টাকার ঋণচুক্তিও হয়ে গেছে।
এমআরটি-৪ এর রুট হলো কমলাপুর থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে মদনপুর পর্যন্ত। এটি বাস্তবায়িত হলে অল্প সময়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত করা যাবে।
ঋণচুক্তি সম্পর্কে দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাস জানিয়েছে, ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা) ২০২৩-২০২৭ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) থেকে দেওয়া হবে। ঋণ পরিশোধের সময়কাল হবে ১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছর। আর বার্ষিক সুদের হার হবে ০ দশমিক ০১ শতাংশ থেকে ০ দশমিক ০৫ শতাংশ।
কমলাপুর টু নারায়ণগঞ্জ মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ১৬ কিলোমিটার। রাজধানীর যানজট কমাতে মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলে মানুষ যাতায়াত করছেন। নভেম্বরের মধ্যে মতিঝিলে পৌঁছার জন্য চলছে তোড়জোড়।
এমআরটি-৪ বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ ধরা হয়েছে ২১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। বাস্তায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুলাই পর্যন্ত।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, মেট্রোরেলের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অর্থের জোগানের ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে তা যাচাই-বাচাই করে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান স্বাক্ষর করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) পাঠান। সব প্রক্রিয়া শেষে মেট্রো-৪ রুটে কোরিয়া ঋণ দিতে রাজি হয়েছে।
কোরিয়া ঋণের নিশ্চয়তা দেওয়ার পর সার্বিক ব্যাপারে আলোচনা করে কোরিয়া সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি (৪ মে) হয়েছে। এই প্রকল্পসহ সড়ক বিভাগের বিআরটিসি কোচ কেনার জন্য ৭ কোটি ৭৪ লাখ ও রেলের ইশ্বরদী থেকে পার্বতীপুরের সিগনালিং সিস্টেমের উন্নয়নে ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে কোরিয়া।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পে আমাদের ঋণ আছে, নিতে হচ্ছে। এটা সহনীয় মাত্রায়। পরিশোধ সক্ষমতা আছে বলেই বিদেশিরা আমাদের ঋণ দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অর্থায়নে ৬৬৪ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে বাংলাদেশে মোট ১৭টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া, ৬১৬ দশমিক ২৮ মিলিয়ন ডলারের ৭টি প্রকল্প বর্তমানে চলমান রয়েছে। দেশটি এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে প্রায় ১ হাজার ৪৪৯ দশমিক ০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নমনীয় ঋণ মঞ্জুর করেছে, যা তার উন্নয়ন অংশীদার দেশের মধ্যে ২য় স্থানে।
আরইউ/এমএমএ/