মধ্যরাতে ডাকাতি করতে গিয়ে কারাগারে ৩ পুলিশ সদস্য
রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের সড়কে মাইক্রোবাস নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন একদল ডাকাত। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মালামাল লুট করা। এ সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে সেখানে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে চাউর হয়, গ্রেপ্তাররা পুলিশের কনস্টেবল।
মিরপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) দায়িত্বরত আছেন এ তিন পুলিশ সদস্য। জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতির উদ্দেশ্যের কথা স্বীকার করেছেন তিন জনই। তাদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্যরা হলেন— রবিউল ব্যাপারী, মো. আজাদ ও উজ্জ্বল চন্দ্র বর্মণ। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তারা। গত ১ এপ্রিল মধ্যরাতে ঢাকা বিমানবন্দরের সামনের সড়ক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (৮ এপ্রিল) বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শফিকুল ইসলাম বলেন, সেই রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তিন কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা আছে।
ওই রাতেই তিন কনস্টেবলসহ নয়জনের নাম উল্লেখ করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন এসআই আহসান উল্লাহ।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর একটি মাইক্রোবাস দেখতে পাওয়া যায়। সেসময় কয়েকজন গাড়িতে অবস্থান করছিলেন। আর বাকিরা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা দ্রুত পালিয়ে যান। আর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলায় নীলফামারীর আবদুর রাজ্জাক, মাদারীপুরের প্রদীপ বালা এবং গোপালগঞ্জের লিংকন মণ্ডলকে আসামি করা হয়েছে। তবে অপর তিন আসামি মিন্টু, বিচিত্র ও জীবনের পরিচয় জানা যায়নি।
গত সোমবার তিন কনস্টেবলকে আদালতে তোলা হয়। পরে তাদের ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।
আবেদনে বলা হয়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের যানবহন থামিয়ে স্বর্ণালংকার ও মালামাল ডাকাতি করে আসছেন গ্রেপ্তার-পলাতক আসামিরা। আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য তারা।
তবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আইনজীবী সুলতানা আক্তার জানান, পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত তার তিন মক্কেলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো অস্ত্র জব্দ করা হয়নি। হয়রানির জন্য এ মামলা দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক মিঞা বলেন, বর্মণকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ডাকাতির প্রস্তুতির কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
ডিএমপির পিওএম বিভাগের (পশ্চিম) উপকমিশনার মোমতাজুল এহসান আহাম্মদ হুমায়ূন এবং পিএমও (উত্তর) বিভাগের উপকমিশনার জসিম উদ্দিন জানান, ওই তিন কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি মিডিয়া মনজুর রহমান বলেন, কারাগারে থাকা ওই ৩ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেএম/আরএ/