জমজমাট পুরান ঢাকার ইফতার বাজার, দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ
পবিত্র মাহে রমজানের দ্বিতীয় দিন আজ শনিবার (২৫ মার্চ)। এদিন রাজধানীর পুরান ঢাকার ইফতারের বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। শনিবার (২৫ মার্চ) বিকালে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার ঘুরে দেখা যায়, জমজমাট হয়ে উঠেছে ইফতার বাজার। তবে ত্রেতাদের অভিযোগ এবার ইফতারের দাম একটু বেশি।
ব্যবসায়ীদের দাবি, রোজার প্রথম দিন ও ২য় দিন সরকারি ছুটি হওয়ায় ইফতারের বাজারে একটু ভিড় কম মনে হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে ১ম দিনের তুলনায় ইফতারের বাজারে রোজাদারদের ভিড় একটু বেশি মনে হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, রমজানজুড়ে ইফতারের ঐতিহ্য মানেই পুরান ঢাকা। যদি পুরান ঢাকার ইফতার না হয় তাহলে রোজায় কিছু একটা গ্যাপ থেকে যায়। এজন্য অনেকেই এখান থেকে ঐতিহ্যবাহী ইফতার কিনে নিয়ে যান পরিবারের জন্য।
বরাবরের মতো এবারও জমে উঠেছে পুরানা ঢাকার চকবাজারের ইফতার বাজার। বড় বাপের পোলায় খায়, আস্ত খাসির রোস্ট, জালি কাবাব, সুতা কাবাবসহ নানা চমকপ্রদ ও স্বাদের ইফতারসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আর সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ভোজনরসিক রোজাদাররা।
ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এখানকার ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশই বিক্রি করেন ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। এবার আকর্ষণীয় এই ইফতারসামগ্রীটি আরও মুখরোচক করা হয়েছে বলে জানালেন এখানকার বিক্রেতারা।
এই ইফিতারের বাজারে পাওয়া যায়, গরুর মগজ, কলিজা, মুরগির মাংস, কলিজা, ডিম থেকে শুরু করে ডাবলি, ছোলাসহ মোট ১৫-২০টি আইটেম পাওয়া যায়।
এখানকার ব্যবসায়ীদের মতে, এসব ইফতার ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ কে জনপ্রিয় করে তুলেছে। তাদের দাবি, কেবল পুরান ঢাকার পুরনো কারিগররাই এই পদটিকে ঐতিহ্যের স্বাদে তৈরি করতে সক্ষম।
মালিবাগ থেকে ইফতার কিনতে এসেছেন আলিক হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের পুরান ঢাকার ইফতার না হলেই হয় না। আম্মা এবং বাবা এখানকার ইফতার পছন্দ করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তবে এবার ইফতারের দাম একটু বেশি।
আজিমপুর থেকে পুরান ঢাকায় ইফতার কিনেতে এসেছেন মো. আলাল। তিনি বলেন, আমরা বাড়ি আজিমপুরে রমজানে আমরা পুরুন ঢাকা থেকে ইফতার কিনে নিয়ে যায়। এখান থেকে ইফতার কিনে কি মজা পান আপনারা?
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জন্ম থেকেই এখান থেকে ইফতার কিনি কারণ হলো এখানে ১৫-২০ প্রকারের ইফতার পাওয়া যায়। তবে এবার ইফতারের দাম বেশি।
শাহাবাগ থেকে ইফতার কিনতে এসছেন জাকির হোসেন তিনি বলেন, আমার বাবা মা এখান থেকেই ইফতার কিনতে বলেন। এজন্য ছোট বেলায় থেকে আমরা এখান থেকে ইফতার আনতে পছন্দ করি।
রমজানের এদিনে দেখা যায়, শাহী মসজিদের সামনের গলিতে যেন পা ফেলার জায়গা নেই। ক্রেতা-বিক্রেতার হই-হুল্লোড়ে মুখরিত পুরো ইফতার বাজার। চলছে বেচাকেনাও। এখানকার অস্থায়ী দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে সুতি কাবাব, জালি কাবাব, টিক্কাসহ প্রায় ১৫-২০ ধরনের কাবার। কাবাবের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডিম চপ, কোয়েল, কবুতরের রোস্টসহ বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী। মিষ্টির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে শাহী জিলাপি, মিষ্টি, দইসহ নানা কিছু।
কেএম/এমএমএ/