এখনো বাতিল ওয়েবিলে চলছে রাজধানীর গণপরিবহন
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে সমালোচনার মুখে ছয় মাস আগে ওয়েবিল প্রথা বাতিল করেছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। কিন্তু সেটি শুধুই মুখে মুখে।
কার্যত এখনো রাজধানীতে চলাচলকারি বিভিন্ন কোম্পানি গাড়ি চলছে ওয়েবিলের মাধ্যমে। তা দেদারসে চালাচ্ছে। ওয়েবিলেই কারণেই যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে কন্ট্রাক্টররা।
রাজধানীর গণপরিবহণে চালু হওয়া ই-টিকিটিং ব্যবস্থার সার্বিক পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিভিন্ন বাসে ভ্রমণ করে জানা গেছে এখনো ওয়েবিল প্রথা চালু আছে। বিভিন্ন বাসে ওয়েবিল অনুযায়ী, ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
অথচ ইতিমধ্যে অনেক রুটেই বিভিন্ন কোম্পানির বাস-মিনিবাসে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কিন্তু তার কার্যকারিতা খুব একটা দেখা যায়নি। বেশিরভাগ পরিবহনেই ই-টিকিটের পজ মেশিন কন্ডাক্টরদের হাতে বা গলায় ঝুলছে আর ভাড়া কাটা হচ্ছে আগের মতোই ম্যানুয়ালি।
রাজধানীতে যাত্রীদের কাছ থকে ভাড়া আদায় নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের বছরের পর বছর চলে আসা নৈরাজ্য ঠেকাতে গত বছরের ১০ আগস্ট ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ঘোষণা দেয় ঢাকা ও এর আশপাশের শহরতলির বাসে রাস্তায় কোনো পরিদর্শক (চেকার) থাকবে না। এক বাসস্ট্যান্ড থেকে অন্য বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চলাচলের সময় বাসের দরজা বন্ধ রাখতে হবে। অর্থাৎ রুট পারমিটে বর্ণিত বাসস্ট্যান্ডের বাইরে কোথাও গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করা যাবে না।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ঢাকা শহরে বাস-মিনিবাসে ওয়েবিল প্রথা এখনো থামেনি। মালিক সমিতির ঘোষণার পরও মোহাম্মদপুর বাসস্টান্ড থেকে বাসাবো রুটে যাতায়াতকারী মিডল্যান্ড, মোহাম্মদপুর থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়াটার রুটে যাতায়াতকারী রমজান পরিবহনসহ বিভিন্ন কোম্পানির গাড়িতে এখনো ওয়েবিলে চালু আছে।
ওয়েবিল হচ্ছে একটি রুটে সাধারণত নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় বাসমালিকের লোকেরা পরিদর্শন বা চেক করছেন। তারা নির্দিষ্ট স্থানে বাস থামিয়ে কতজন যাত্রী আছে তা লিখে দিচ্ছেন। এর ফলে একজন যাত্রীকে বাসে উঠে পরের স্ট্যান্ডে নেমে গেলে পরবর্তী ওয়েবিল চেক করা স্টপেজ পর্যন্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ফলে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
সৌরভ নামে এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বনশ্রী রুটে যাতায়াতকারী তরঙ্গ বাসে (ঢাকা মেট্রা ব ১১৯৪৪৭) ওঠার পর কন্ডাক্টর ভাড়া চাইলে তিনি টিকিট চান। জবাবে কন্ডাক্টর বলেন, কিসের টিকিট। ওয়েবিল আছে সেভাবে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে মিডলাইন পরিবহনের সুপারভাইজার আকাশ বলেন, মেশিন নষ্ট। ওয়েবিলে চলে এটা। ভাড়া সেভাবে নেওয়া হচ্ছে।
বাতিল ওয়েবিলে ভাড়া আদায় ও ই-টিকিটিং না মানার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমরা আগেই বলেছি গেটলক, সিটিং সার্ভিস, ওয়েবিল, চেকার-এসব থাকবে না। প্রত্যেক বাসে ই-টিকিটিং সিস্টেমে ভাড়া নিশ্চিত করার জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। ২৫ জন লোক নিয়োগ করেছি। তারা চেক করছে। অভিয়ান চালাচ্ছে। নিয়ম ভাঙার প্রবণতা অনেকের আছে। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে এটা নিয়মে আনার জন্য চেষ্টা করছি। আরও কয়েক মাস লাগবে।
জেডএ/এনএইচবি/এমএমএ/