‘ই-টিকিটিংয়ের নামে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে’
‘গণপরিবহনের ভাড়া আগের নিয়মেই চলছে। ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া আদায়ের করা হলো পরিরহণ সেক্টরের একটি কৌশল। মূলত যাত্রীদের বোকা বানিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে, কাটা হচ্ছে পকেট।’
এভাবেই নিজের ক্ষোভের কথা ঢাকাপ্রকাশ-এর কাছে প্রকাশ করেন বিকাশ পরিবহনের যাত্রী নয়ন।
শুধু নয়ন নয়, এরকম হাজারো মানুষ যারা নিয়মিত রাজধানীর গণপরিবহনের যাত্রী তাদের প্রায় প্রত্যেকের অভিযোগ, কিছু কিছু পরিবহনে ই-টিকিটিং চালু হলেও ভাড়া নেওয়া হয় আগের নিয়মেই। আর যারা ই-টিকিটিংয়ের নামে ভাড়া নিচ্ছেন তারাও যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর আজিমপুর এলাকায় সরেজমিনে ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া আদায়ের বিষয়ে পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর প্রায় সব রুটে চলাচলকারী পরিবহনে ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া আদায় করা শুরু হয়। প্রথম দফায় গত নভেম্বরে রাজধানীতে চলাচলকারী ৩০টি কোম্পানির এক হাজার ৬৪০টি বাসে ই-টিকিটিং চালু হয়। এরপর আরও দুই দফায় মোট ১৩টি কোম্পানির ৯৪৭টি বাস ও ১৫টি কোম্পিানির ৭১১টি বাসে ই-টিকিটিং চালু করা হয়। এই ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করেছে মূলত ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
তবে এখনো রাজধানীতে চলাচলকারি আরও বহু কোম্পানির গাড়িই ই-টিকিটিংয়ের আওতায় আসেনি।
গাজিপুর-নিউ মার্কেটে রুটে চলাচল করে ভিআইপি-২৭ নামে একটি পরিবহন। এই বাসের যাত্রী লাভলী আক্তার বলেন, ভাড়া তো আগের মতোই আছে। তেমন কোনো পরিবর্তন দেখছি না। প্রতিদিন চলাচল করতে হয় এজন্য ভাড়া নিয়ে আর ঝামেল ভালো লাগে না।
দেওয়ান পরিবহনের চালক আলী হোসেন বলেন, অনেকগুলো পরিবহনে ই-টিকিটিং চালু হয়েছে। এর মধ্যে আমাদেরটাও আছে। অনেক যাত্রী টিকিট কেনা বোঝে না, আমরা তাদের মেশিননের মাধ্যমে নিধারিত ভাড়া কেটে গন্তব্যে পৌঁছে দিই।
তিনি বলেন, ‘তবে মেশিনের ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অনেক সময় যাত্রীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়।’
ই টিকিটিংয়ের নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকানা পরিবহনের যাত্রী শরিফুল মিয়া বলেন, সাভার থেকে আজিমপুরে এসেছি ৭০ টাকা দিয়ে। আগে এর ভাড়া ছিল ৬০ টাকা। মেশিনে এখন নেয় ৭০ টাকা। তাহলে আমাদের কোনো উপকারে আসেনি এই ই-টিকিটিং।
ই-টিকিটিং নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আজিমপুরের প্রায় সকল পরিবহনেই ই-টিকিটিং চালু রয়েছে। অনেক সময় যাত্রীরা বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেন না। যার কারণে পরিবহনের চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরদের সঙ্গে বিভিন্ন ঝামেলা করেন। যাত্রী ভাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে বা বুঝলে তারা আর ঝামেলার মধ্যে যান না। তার দাবি, এই সিস্টেমে ভালোই চলছে।’
কেএম/এনএইচবি/এমএমএ/