তাদের চোখে মুখে হাহাকার!
গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা প্রিয়জনকে হারিয়ে বড্ড অসহায় হয়ে পড়েছেন নিহতের স্বজনরা। আহতদের কষ্ট আর স্বজনদের চাপা কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। একই অবস্থা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। দুই হাসপাতাল মিলে ভর্তি রোগীর সংখ্যা অন্তত ৪০-৫০ জন।
একদিকে স্বজন হারানোর কষ্ট, আরেকদিকে আহত স্বজনের চিকিৎসা। আরও রূঢ় বাস্তবতা হলো আর্থিক টানাপোড়েন। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি অচল হয়ে পড়ায় দুশ্চিন্তায় স্বজনেরা। এই দুর্ঘটনায় থমকে গেছে অনেকের জীবন। হাসপাতালে হতাহতদের স্বজনদের অসহায় মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।
সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা আর চোখে রাজ্যের অনিশ্চয়তা। ফল ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহে, সেখানেই থাকেন স্ত্রী ও সন্তানরা। আমিনুলের দোকান ছিল সিদ্দিকবাজারের সামনে। মঙ্গলবারের আকস্মিক বিস্ফোরণে পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তার। কিন্তু সেই তথ্য তিনি জানাননি স্ত্রী ও সন্তানদের।
আমিনুলের মতো একই অবস্থা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন আরও ২০ জন। অনেকের দশা এতই করুণ যে, সেই ছবি গণমাধ্যমে দেখানো অসম্ভব।
জীবন থমকে দেওয়া সেই স্মৃতি নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন সানি ও শহীদুল। স্বজনরা বলছেন, মাথা ও মুখে বেশি আঘাত পাওয়ায় কবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে সেটা জানা নেই। পরিবারগুলো এখন কীভাবে চলবে তা নিয়ে শঙ্কায় তারা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, গুলিস্তানের বিস্ফোরণে ধসে পড়া সাততলা ভবনের ভেতর থেকে আরও ২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনের।
এদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে দগ্ধ রোগী ১০ জন। এরমধ্যে সলিমুল্লাহ মেডিকেলের একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকও আছেন। ১০ জনের মধ্যে ৩ জন আইসিউতে, তাদের মধ্যে আবার দুইজন লাইফ সাপোর্টে অছেন। তাদের একজনের ৯০ শতাংশ, একজনের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেলে খোলা হয়েছে একটি সহায়তা কেন্দ্র। এখান থেকে নিহত ও আহতদের তালিকা করে দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তা।
কেএম/এসএন