স্বাধীনতা স্তম্ভ’র জলাশয় জুড়ে ময়লার ভাগাড়!
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। লোকে লোকারণ্য। উপলক্ষ অমর একুশে বইমেলা। বাংলা একাডেমি চত্বর ছাড়িয়ে বছর কয়েক আগেই বইমেলা স্থান করে নিয়েছে স্বাধীনতা স্তম্ভ সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা চত্বরে অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় লোকজনের ভিড় থাকে বেশি। গতকাল এবং আজও এর ব্যতিক্রম ছিল না। মানুষের হাতে হাতে বই না থাকলেও খাবারের দোকানগুলোতে কমতি নেই বিক্রির।
শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ সব বয়সি মানুষের ভিড়ে একাকার বইমেলা প্রাঙ্গণ। স্বাধীনতা স্তম্ভের বদ্ধ জলাশয়ের তিন পাশ ঘিরেই আছে বইয়ের স্টল। আছে খাবারের দোকান। আর তাতেই সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে স্বাধীনতা স্তম্ভ’র সামনের জলাশয়।
খাবার কিনেই লোকজন জলাশয়ের পাশের পাকা বেঞ্চগুলোতে বসে তুমুল আড্ডা দিচ্ছেন। নানান গল্পে মেতে উঠছেন। সেই আড্ডা গল্প তো খালি মুখে হয় না। কারও হাতে চা বা কফির ওয়ান টাইম কাপ। কারও হাতে কোমল পানীয়ের বোতল। কেউ চিপস, চানাচুরের প্যাকেট খুলে দিব্যি ভক্ষণ করছেন। খাওয়া শেষে তাদের হাতের কাপ, বোতল, চিপসের খালি প্যাকেট ছুড়ে ফেলছেন জলাশয়ে। তাতেই নোংরা হচ্ছে স্বাধীনতা স্তম্ভ’র উম্মুক্ত জলাশয়। রীতিমত ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে জলাশয়। সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে স্বাধীনতা স্তম্ভ’র জলাশয়সহ চারপাশ।
শুধু তাই নয়, অগভীর এই জলাশয়ের স্বচ্ছ জল কালচে হয়ে গেছে। পানির নিচে একটু খেয়াল করে তাকালেই দেখা যায় ময়লার গভীর স্তর। কিন্তু এসব দেখভালের যেন কেউ নেই!
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল মাঠ জুড়ে বইমেলার মতো বড় আয়োজন হলেও স্বাধীনতা স্তম্ভ’র উম্মুক্ত জলাশয়কে পরিচ্ছন্ন করা কিংবা কেউ যাতে ময়লা আবর্জনা না ফেলে সেগুলো দেখার কেউ নেই।
শুক্রবার সেখানে কথা হয়, অনেকের সঙ্গে। যারা জলাশয়ের পাশের বেঞ্চে বসে খাওয়া শেষ করে হাতে থাকা ময়লা, বোতল, কাপ দিব্যি ফেলে দিচ্ছেন জলাশয়ে। নারী, শিশু, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী কেউ বাদ নেই।
জানতে চাইলে আয়েশা নামে একজন বললেন, ময়লা ফেলব কোথায়, সামনে খালি পানি দেখে ফেলে দিয়েছি। এতে জলাশয়ের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে বলতেই তিনি যেন কিছুটা লজ্জাবোধ করলেন। স্থান ছেড়ে চলে গেলেন।
সাংবাদিক ও লেখক মাসুদ করিম বলছিলেন, এখানে ময়লার বিন থাকা দরকার ছিল। বিন না থাকায় লোকজন ময়লা ফেলছে জলাশয়ে। তিনি বলেন, এটা যথার্থ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে। এখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া দরকার।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হাবিবুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে চেষ্টা করলে তিনি জানান,‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যম ছাড়া তিনি কোনো তথ্য বা বক্তব্য দিতে পারবেন না।’
তথ্য নয়, তার বক্তব্যের বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি আর কোনো জবাব দেননি।
এনএইচবি/এমএমএ/