শিক্ষার্থীদের লাল কার্ড সমাবেশে পুলিশ-ছাত্রলীগের বাধার অভিযোগ
নতুন বছরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে ইতিহাস বিকৃতি, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বিষয়বস্তু, এলজিবিটি (নারী ও পুরুষ সমকামী, উভকামী ও রূপান্তরকামী) প্রোমট করার প্রতিবাদে পাঠ্যক্রমকে প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর শাহবাগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘লাল কার্ড সমাবেশ’-এ পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাধার অভিযোগ উঠেছে। এতে পণ্ড হয়ে যায় সমাবেশটি।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বের বাধার মুখে পড়ে। তবে বাধা প্রদানের বিষয়টি ছাত্রলীগ ও পুলিশ উভয়ই অস্বীকার করে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গণমাধ্যম কর্মীদের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাধা পেয়ে কর্মসূচি পালনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ এলাকা ত্যাগ করেন। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
লাল কার্ড সমাবেশের অন্যতম আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইসলামি ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শাহবাগে লাল কার্ড কর্মসূচিতে অংশ নিলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে, আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়। তবে কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
লাল কার্ড সমাবেশ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। পরে কর্মসূচি দেওয়া হলে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাবার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তারা গান-বাজনাতে মেতে উঠেন। এ সময় সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকেও সেখানে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমি এর আগে পেছনে কি হয়েছে জানি না। শিল্পচর্চার মুক্তাঙ্গন হলো শাহবাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে সাংস্কৃতিক চর্চা করছে এর খবর পেয়ে আমি এখানে এসেছি। মৌলবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ সবসময়ই থাকবে, আর ছাত্রলীগ এমন প্রতিবাদের সঙ্গে সবসময়ই থাকবে।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুজ্জামান বলেন, আমরা এখানে কাউকে আন্দোলন করতে দেখিনি। আর ব্যানার কেড়ে নেওয়া মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা এতটুকুই জানি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এখানে তাদের কর্মসূচি পালন করছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার (১৬ জানুয়ারি) লাল কার্ড সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সঙ্গত কারণ দেখিয়ে তা পিছিয়ে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
এমএমএ/