গুলশানে স্পা সেন্টারে অভিযান, মামলা
রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের ৪৭ রোডের ২৫ নম্বর আবাসিক ভবনের স্পা সেন্টারে বুধবার (১১ জানুয়ারি) অভিযান চালায় ডিএনসিসি। অভিযানের সময় একজন তরুণী উপর থেকে লাফ দিয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানায় মামলাটি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাসিব।
মামলায় স্পা সেন্টারের মালিক, ব্যবস্থাপক ও স্পা সেন্টারের ফ্ল্যাটের মালিককে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও ডিএনসিসির অভিযানে গ্রেপ্তার সাত নারীর বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসা করার অভিযোগে ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রসিকিউশন ইউনিটের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ওই মামলার আসামিরা হলেন— স্পা সেন্টারের মালিক হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান, তার স্ত্রী ও স্পা সেন্টারের ম্যানেজার সাইনুর আক্তার পায়েল ও ফ্ল্যাটের মালিক এটিএম মাহাবুবুল আলম।
এসআই মো. হাসিব বলেন, গুলশানের স্পা সেন্টারে অভিযানের ঘটনায় ডিএনসিসির প্রসিকিউশন অফিসার (অঞ্চল-৩) আব্দুস সালাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ আনা হয়— অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে অনৈতিক উপায়ে লাভবান হওয়ার জন্য পতিতালয় চালাচ্ছিল। মামলাটি আমরা তদন্ত করছি।
তিনি বলেন, এ ছাড়া ডিএনসিসির অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া সাত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রসিকিউশন ইউনিটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্পা সেন্টার থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহত ফারজানা আক্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই হাসিব বলেন, ফারজানা আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে রেজিস্টার হয়েছে। আমরা এখন তদন্ত করে দেখব আসলে তার মৃত্যুর কারণ কী। এ ছাড়া আমরা তদন্তে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব তিনি আসলে কীভাবে মারা গেছেন।
মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে খোঁজ খবর নিয়েছি। মামলার আসামিরা এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া পতিতালয় চালানোর যে অভিযোগ আনা হয়েছে এতে আসামিদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছেন কি না তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।
ইশরাত নামে এক নারী স্পা সেন্টারটির ফ্ল্যাটের মালিক বলে জানা গেছে। কিন্তু ডিএনসিসির অভিযোগে ফ্ল্যাটটির মালিক এটিএম মাহাবুবুল আলম বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। ফ্ল্যাটটির মালিক আরও কেউ আছেন কি না বা ফ্ল্যাটের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে কি না জানার চেষ্টা করছি।
উল্লেখ্য, বুধবার (১১ জানুয়ারি) গুলশান-২ এর একটি বাসায় আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এমন তথ্য ভিত্তিতে অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। অভিযান চলাকালে ভবনটির ৪ তলায় থাকা স্পা সেন্টারের দুই কর্মী পালিয়ে যাওয়ার জন্য লাফ দেন। এতে ফারজানা আক্তার (১৯) নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় আরেক তরণী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
কেএম/আরএ/