আওয়ামী লীগ নেতা দুরন্ত বিপ্লব হত্যাকাণ্ডের শিকার!
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য তরুণ রাজনীতিক দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে না কি নদীতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা বিপ্লব মারা গেছেন নদীতে পড়ে।
অবশ্য বিপ্লবের স্বজনদের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলছেন, বিপ্লব হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে পারেন। তার শরীরে বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য দুরন্ত বিপ্লব। গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুরে মায়ের বাড়ি আসার পথে নিখোঁজ হন।
তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর গত শনিবার বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
দুরন্ত বিপ্লবের লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক মফিজুল উদ্দিন বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী দুরন্ত বিপ্লব হত্যা করা হয়েছে।
গত রবিবার তার ময়না তদন্ত শেষে চিকিৎসক তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া কথা জানিয়েছেন। দুরন্ত বিপ্লবকে মাথায় ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এই চিকিৎসক বলেন, আমরা ধারণা করছি ভারী কোনো বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুরন্ত বিপ্লবকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ভিসেরা রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।
দুরন্তের ভগ্নিপতি ইমরুল খান বলেছেন, এটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছি। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
দুরন্তের ছোট ভাই দুর্জয় বিপ্লব বলেন, কয়েক দিন আগে ভাইয়াসহ তার চার বন্ধু মিলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একটি কৃষি খামার করেছিলেন। এ বিষয়ে আপাতত আর তেমন কিছু বলতে পারছি না।
দুরন্তের মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজামান মুঠো ফোনে ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, দুরন্ত বিপ্লবের মোবাইল ফোনের লোকেশন আমরা নিশ্চিত করেছি। যেখানে দুর্ঘটনাটির কথা বলা হয়েছে সেখানে আমরা তদন্ত করছি। তবে এখন ও তেমন কিছু পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, যেদিন সে মারা যায় অর্থাৎ ৭ নভেম্বর তার সর্বশেষ অবস্থান সেখানেই ছিল। তিনি বলেন, তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি। ওই দিন নদী থেকে একজন নৌকা থেকে পড়ে যায়। সেই ব্যক্তি দুরন্ত কি না সেটা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। এই ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে কাজ করছি।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মো. হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের নেতা দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। মিডিয়াতে বলার মতো সময় হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌ পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাথী রানী শর্মা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, যেহেতু ঘটনাটি নদী পথে ঘটেছে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই নৌ-পুলিশ কাজ করছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ফারদিন হত্যা এবং দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। ফারদিনের মামলার বিষয়ে এখনো বলার সময় হয়নি। পুলিশ কাজ করছে। তারা যথাসময়ে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে গণমাধ্যমকে জানাবে।
তিনি বলেন, ‘তার লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে। এখন আপাতত এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’
জানা যায়, নিহত দুরন্ত কয়েক বছর ধরে কেরানীগঞ্জের বাস্তা এলাকায় সোনামাটি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি কৃষি খামার চালাচ্ছিলেন।
এনএইচবি/এমএমএ/