বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জন
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী শেষে বুড়িগঙ্গা নদীর সংশ্লিষ্ট সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বিনাস্মৃতি স্নানঘাটে শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জন।
বুধবার (৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ৩টায় ওয়ারীর টিপু সুলতান রোড থেকে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ জিউ বিগ্রহ মন্দির থেকে প্রথম প্রতিমা বির্সজনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বির্সজন শুরু হয়।
এর পর একে একে আসে ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি, টিকাটুলির সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে ইয়াংস্টার পূজা কমিটি, হাজারীবাগ সিটি কলোনি মন্দির।
প্রতিমা নিয়ে আসা সারি সারি ট্রাক থেকে পর্যায়ক্রমে সেগুলো নৌকায় করে বুড়িগঙ্গা নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দেওয়া হয় বিসর্জন।
ভক্তরা বিষাদ ভুলে হাসিমুখে দেবী মাকে বিদায় জানাতে উৎসবে মেতে ওঠেন। বিসর্জনের আগপর্যন্ত তারা একে-অন্যকে সিঁদুরে রাঙান, ঢাক-ঢোলের তালে নাচ-গান করেন, যেন সারা বছর এমন আনন্দে কাটে।
স্বামীবাগ থেকে এসেছেন ননী গোপাল সরকার ও তার স্ত্রী পুষ্পরানী সরকার। তারা বলেন, আমরা এসেছি মাকে বির্সজন দিতে। আজকে মাকে বির্সজন দিলাম যাতে মা আগামী বছর আবার আসে আমাদের সুখ সমৃদ্ধি নিয়ে।
প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে সদরঘাট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় দেখা গেছে। এ বিষয়ে কতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানায়, সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। আশা করি প্রতিমা বিসর্জনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন কেউ হবে না। সবাই সুষ্ঠভাবে প্রতিমা বিসর্জন করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিমা বির্সজন দিতে গিয়ে যাতে কোনোরকম দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য আমরা বৃদ্ধ, শিশু, ও মহিলাদের নৌকায় উঠতে দিচ্ছি না। এখনে পূজা উদযাপন কমিটি আছে তারা যাদের সিলেক্ট করছে তারাই কেবল নৌকায় উঠে প্রতিমা বির্সজন দিতে পারবেন।
এ ছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতার জন্য নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উপস্থিতি দেখা গেছে।
প্রতিমা বির্সজনের সময় বুড়িগঙ্গা নদীতে বাংলাদেশ নৌ পুলিশের জলযান নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি স্প্রীড বোড দিয়ে প্রতিমা বির্সজনের ঘাটসহ আশপাস এলাকা টহল দেয়। নদী পথে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া প্রতিটা নৌকার সঙ্গে নৌ পুলিশের একটি করে স্পিড বোট দেখা যায়।
পুলিশের নিরাপত্তা নিয়ে মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটিসহ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শ্রী বিপুল ঘোষ শংকর বলেন, প্রতিমা বির্সজন উপলক্ষে আইন শৃংখলা বাহিনি যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে আমরা খুশি। আজকে এখানে ঢাকা শহরের বেশিরভাগ প্রতিমা এখানে বির্সজন হবে। সব মিলিয়ে ৯০টি মন্দির থেকে এখানে প্রতিমা নিয়ে আসা হবে বির্সজনের জন্য। আমরা আমাদের কমিটির মাধ্যমে এই বির্সজন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এমবি/এমএমএ/