ভাড়া বাড়ায় যাত্রীদের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ বাসকর্মীরাও
তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বাসভাড়া বাড়ায় বাসকর্মী-যাত্রী উভয়ই ক্ষুব্ধ। বাসকর্মীরা বলছেন, লিটার প্রতি ৩৪ টাকা বেড়েছে ডিজেলের দাম। ভাড়া না বাড়িয়ে তো উপায় থাকে না। অন্যদিকে, যাত্রীরা বলছেন, বাস মালিকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছে।
বাস কন্ডাক্টরদের সঙ্গে প্রতিনিয়তই ঝামেলা হচ্ছে যাত্রীদের। অন্যদিকে বাসকর্মীরা বলছেন, তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার আমাদের যাত্রীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
সরেজমিন ফার্মগেট থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত বিভিন্ন বাসের যাত্রী ও কন্ডাক্টরদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি তাই যাত্রী-বাসকর্মী সবাই নাখোশ।
ফার্মগেটে ৩ নম্বর রুটের যাত্রী মুস্তাফিজ বললেন, আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ। না পারি কইতে না পারি সইতে। সবকিছুর দাম তো আগেই বেড়েছে। এখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বাড়তি বাসভাড়া।
মুস্তাফিজ বলছেন, আগে ৩ নম্বর বাসে মহাখালী থেকে গুলিস্তান যেতাম ২০ টাকা দিয়ে। এখন নেওয়া হচ্ছে ২৫ টাকা। এভাবে প্রতিটি রুটেই দূরত্বভেদে ভাড়া বেড়েছে।
৩ নম্বর বাসেরই আরেক যাত্রী আলফাজ আনাম বলেন, সরকার তেলের দাম বাড়াল। কিন্তু বাসভাড়া বাড়ানোর প্রভাব মাথায় না নিয়েই দাম বাড়াল। এভাবে দাম বাড়ালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সেটা মাথায় নিল না।
এর ফলে প্রতিনিয়ত বাসকর্মীদের সঙ্গে যাত্রীদের ঝামেলা হচ্ছে দাবি করে আলফাজ বলেন, আমরা কী করে বেঁচে থাকব বুঝতে পারছি না। বাসভাড়া বৃদ্ধির একটা চার্ট আছে। সেই চার্টও অনেক সময় মানা হচ্ছে না।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী রেজাউল করিম বললেন, ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে প্রতি লিটার ৩৪ টাকা। তাই এখন সবাই ডিজেলচালিত হয়ে গেছে বলে দাবি করছে। অথচ ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী প্রায় সব বাসই সিএনজিচালিত।
রেজাউল বলেন, মিরপুর থেকে গুলিস্তানের ভাড়া ৩০ টাকা। কিন্তু মাঝপথ থেকে উঠলেও ২০ টাকা নেওয়া হয় না। কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নেওয়া হয় না।
যাত্রীদের বাইরে দুজন বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে কথা হয় ঢাকাপ্রকাশের। তারা দুজনই বলছেন, ভাড়া বাড়ানো ছাড়া তো উপায় নেই। দুজনই দাবি করেন তাদের বাস ডিজেলচালিত।
বিহঙ্গ পরিবহনের কন্ডাক্টর রশিদ বলেন, লিটারপ্রতি ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। যানজটের কারণে ট্রিপও হয় না বেশি। আমরা কিন্তু ভালো নেই। আমরা ঠিকমতো বেতন পাই না। কোনো সিকিউরিটি নেই আমাদের।
লাব্বাইক পরিবহনের কন্ডাক্টর রিপন বললেন, ভাড়া কিলোমিটারপ্রতিই নিচ্ছেন তারা। কিলোমিটারপ্রতি দুই টাকা। অনেক সময় যাত্রীদের কাছে ভাঙতি না থাকলে ৫ টাকাই দিয়ে দেয়। অনেক যাত্রী ঝামেলা করে। তখন আমরা দুই টাকার বদলে ৫ টাকা ফেরতও দিই।
আরইউ/এসএন