নির্বাচন কমিশনের কিছু করার ক্ষমতা নেই: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রধান মাধ্যম। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে, অথচ এই দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে তখন আমরাও বুঝতে পেরেছি যে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে জরুরি। ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আদালতের মাধ্যমে সিস্টেমেটিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থেকে সরে এসেছে।’
রবিবার ১৭ জুলাই খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একদিনের মধ্যেই শেখ হাসিনা আদালতের রায়ের কথা বলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। উদ্দেশ্য তারা চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে চায়। তবে এটাও সত্য কথা দলীয় সরকারের অধীনে পৃথিবীর অনেক দেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ টাও বুঝতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি অপর একটি রাজনৈতিক দল বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ বিগত নির্বাচনে এটাই প্রমাণ করেছে, যে দলীয় সরকারের অধীনে কোন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। এমন কি স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও তারা জোর করে কেড়ে নিয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনের সংলাপ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, অতীতে নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা দলের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমরা আশা করে ছিলাম তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিবে-কিন্তু কিছুই নেয়নি। এইবারও একই পদ্ধতিতে একইভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।’
‘আমাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে সরকার যদি আওয়ামী লীগ থাকে তাহলে যে নির্বাচন কমিশনেই দেন না কেন সেই কমিশন কখনোই একটি নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না। ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচন বয়কট করেছি ১৮ সালে গিয়েছি এই প্রত্যাশায় যে হয় তো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করবেন। কিন্তু দেখা গেল দিনের ভোট আগের দিন রাতেই কেটে রাখা হয়েছে। এইসব বিবেচনা আপনারা (সাংবাদিক) কি করে আশা করেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যাব? আলোচনা করব কথা বলব। কি করে (নির্বাচন কমিশন) তারা, তারা কিছুই করে না, তাদের কিছু করার ক্ষমতাই নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই দেশের মানুষ চায় না এই সরকার ও এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচন হোক। তাই আমরা সংলাপ- আলোচনা- ইভিএম কোনো কিছুতেই কোনো কমেন্ট করছি না। আমরা যদি এই সরকারকে বিদায় করতে না পারি তাহলে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন যত কথাই বলুক প্রশ্নটা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে, সেই সময় সরকার যদি ওরা (আওয়ামী লীগ) থাকে এবং হাসিনা যদি প্রধানমন্ত্রী থাকে তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, যা আমরা অতীতে দেখেছি।’
এই নির্বাচন কমিশন সরে গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা কিংবা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করছেন কিনা প্রশ্নের মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার যদি আওয়ামী লীগ থাকে এবং প্রধানমন্ত্রী যদি শেখ হাসিনাই থাকে তাহলে এই নির্বাচন কমিশন গেলেই কি আর না গেলেই কি?’
এ সময় তিনি সম্প্রতি নড়াইলে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং সাম্প্রদায়িকতা কোনমতেই কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন।
এমএইচ/