চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, সফল হয়েছি: মেয়র আতিক
কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণে ১২ ঘণ্টার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, নগরবাসীর সহযোগিতায় সফল হয়েছি বলে দাবি করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। আমাকে অনেকে বলেছিল ২৪ ঘণ্টায় রাখেন। যদি ১২ ঘণ্টায় পরিষ্কার করতে পারি তাহলে তো প্লাস পয়েন্ট। আমি বলেছিলাম না এরকম কাজ করতে চাই না। আমরা কাজ করতে চাই। যেটা পারব সেটা কেন ১২ ঘণ্টার জায়গায় ২৪ ঘণ্টা লাগবে। কেন ১২ ঘণ্টার জায়গায় ২৪ ঘণ্টা রাখব। তাই সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। নগরবাসীর সহযোগিতায় রবিবার রাত ১০টার মধ্যে সকল বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি।
সোমবার (১১ জুলাই) দুপুরে ঈদ পরবর্তী কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কতগুলো গাড়ি লাগবে, কতগুলো পলিথিন লাগবে, কত টন বর্জ্য হতে পারে, কতজন শ্রমিক দরকার তা ঈদের আগে হিসেব করে ঠিক করেছি। এ কারণে আমরা সফল হয়েছি। আগে কোরবানির পর অলিগলিতে গন্ধে যাওয়া যেত না, এবার আর সেটি নেই। স্থানীয় কাউন্সিলর, ডিএনসিসির কর্মকর্তা এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় কাজটি করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, এবার ১২ ঘণ্টায় অপসারণ করেছি। আগামী বছর আর পূর্বের অবস্থায় যাওয়ার সুযোগ নেই। আগামী বছর টার্গেট থাকবে কীভাবে এই সময় আরও কমিয়ে আনা যায়। এবার যেটা পেরেছি সেটা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এবার ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার করে ফেলেছি। আগামী বছর নগরবাসী এর চেয়ে বেশি সময় মেনে নিবে না। সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
নগরবাসীর প্রতি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এবার ৩টি জায়গায় প্যান্ডেল করে দিয়েছিলাম। এর মধ্যে মিরপুর ৭নং ওয়ার্ডে একটি প্যান্ডেলের নিচে ৬ হাজার ৭০০ পশু কোরবানি হয়েছে। আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গাড়ি দিয়ে বাসায় বাসায় মাংস পৌঁছে দিয়েছি। নগরবাসী চাইলে আগামীতে আরও প্যান্ডেল করে দেব। যেখানে সেখানে কোরবানি দেওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি চাই নগরবাসী আমাকে ডাকুন, যত প্যান্ডেল লাগে, যত গাড়ি লাগে দিতে প্রস্তুত আছি। নগরবাসী আমাদের নিয়ে বসলে আমরা সেটি করে দেব। নির্দিষ্ট জায়গায় কোরবানি দিলে আর ১২ ঘণ্টা লাগবে না, বর্জ্য তখনই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ডিএনসিসির ৭নং ওয়ার্ডে এক প্যান্ডেলের নিজে ৬ হাজার ৭০০ পশু কোরবানি করার জন্য সেই ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা কাজও সফল হয়েছে। এজন্য ৭নং ওয়ার্ডকে এবার প্রথম ঘোষণা দেন মেয়র। আগামীতে এই ধারা অব্যাহত রাখতে নগরবাসীর সহযোগিতা চান মেয়র।
মেয়র বলেন, প্রথমবারের মতো পাইলট প্রকল্প। আগামীতে আরও মাইকিং করব। আরও বেশি ক্যাম্পেইন করব। সকল সাপোর্ট আমরা দেব। আপনারা আমাদের সঙ্গে বসুন। প্যান্ডেল আরও বাড়িয়ে দেব। গাড়ি দুইটির জায়গায় তিনটি করে দেব তবুও নির্দিষ্ট জায়গায় যেন পশু কোরবানি দিই। এই শহর ভালো থাকবে। তখন ২৪ ঘণ্টা বা ১২ ঘণ্টা লাগবে না সঙ্গে সঙ্গেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কোরবানির বর্জ্যের পরিমাণ
ঈদের আগের দিন সকাল ১১টা থেকে ঈদের পরদিন সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ৪ হাজার ২৬৭ টি ট্রিপে মোট ১৯ হাজার ২২৩ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ঈদের আগের দিন ট্রিপ ছিল ৬৮৪টি আর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৬৬ মেট্রিক টন। ঈদের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮৮টি ট্রিপের মাধ্যমে ৬ হাজার ৮৭২ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ঈদের পরদিন সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৯৯৫টি ট্রিপের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ করা হয় ৮ হাজার ৪৮৫ মেট্রিক টন।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংখ্যা
কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ২ হাজার ৪০২ জন এবং অন্যান্য বেসরকারি ব্যবস্থাপনাসহ মোট ৯ হাজার ৯৯০ জন কর্মী কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত ছিল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ উল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান প্রমুখ।
এসএম/এসজি/