সীতাকুণ্ডের ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবি: সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট
সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তার, বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। এসবম তারা বলেন, এ ঘটনায় ৪০০ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে তাদের ও জরুরী চিকিৎসা দিতে হবে বলে জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। সোমবার (৬ জুন) সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট ঢাকা নগর শাখা আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, ঢাকা নগর শাখার সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি প্রকৌশলী শম্পা বসু, বাংলাদেশ ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহ্বায়ক রাশেদুর রহমান রাশেদ প্রমুখ।
এ সময় সমাবেশে বক্তারা বলেন, যে সময়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলন চলমান এবং সেখানে প্রধান আলোচ্য বিষয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, ঠিক সেই সময়ে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মৃত্যু এবং চার শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী, উদ্ধারকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনা কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাহীনতার চিত্রটি আবার সামনে এনেছে।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৯০ সালে সাড়াকা গার্মেন্টস থেকে কর্মক্ষেত্রের মৃত্যুর যে মিছিল শুরু হয়েছে শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অত্যধিক মুনাফালিপ্সা, রাষ্ট্রের মালিক তোষণ নীতি এবং আইন বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের কর্তব্য অবহেলা আর দুর্নীতির কারণে, প্রাণহানীর সেই মিছিল যেন আর থামছে না।
তারা বলেন, জীবিকার জন্য এসে হাজার-হাজার শ্রমিকের জীবন হারানোর কারণে কোনো মালিক বা সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে শাস্তি পেতে হয়নি। একটি পরিবারের স্বপ্নকে পুড়িয়ে দিয়েও মাত্র ২ লাখ টাকা দিয়ে মালিক দায় থেকে অব্যহতি পাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি আর শিল্পের উন্নয়নের জন্য সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে, শুধু শ্রমিকের শ্রম আর জীবনের দাম বাড়েনি।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিক কর্তৃপক্ষ একদিকে কেমিক্যাল মজুদ করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা আয়োজন করেননি, অপরদিকে তথ্য গোপন করেছেন। ফলে কনটেইনার বিস্ফোরণে এই মৃত্যুর জন্য অবশ্যই মালিক কর্তৃপক্ষ দায়ী। আর ঠিকাদারি প্রথা বা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিক নিযুক্ত করায় এই শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা প্রশ্নে দরকষাকষির সুযোগ ছিল না।
সরকার এখন পর্যন্ত পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট আইএলও কনভেনশনগুলো অনুস্বাক্ষর করেনি, যা নিরাপদ কর্মক্ষেত্র বা কর্মপরিবেশ নিরাপদ করার জন্য সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। ডিপোয় বিস্ফোরণে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুসারে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং আহত প্রত্যেককে সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
কেএম/এএজেড