ওয়াসার পরিশোধিত পানিতে করোনা নেই
ঢাকা ওয়াসার পরিশোধিত পানিতে করোনার ভাইরাসের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেনের পানিতে এবং কর্দমাক্ত স্থানে করোনার জীবাণুর অস্তিত্ব রয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেনের পানিতে ৫৬ শতাংশ ও কর্দমাক্ত স্থানে ৫৩ শতাংশ ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সোমবার (৩০ মে) রাজধানীর ওয়াসা ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ আইসিডিডিআর,বি ও ঢাকা ওয়াসার যৌথ গবেষণার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থা দুটি জানায়, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাস ব্যাপী এক গবেষণা চালিয়েছে ঢাকা ওয়াসা ও আইসিডিডিআরবি। গবেষণায় নেতৃত্ব দেন আইসিডিডিআর,বি'র এমিরেটাস সাইন্টিস্ট ড.সিরাজুল ইসলাম।
ঢাকা ওয়াসার পাগলা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট , নারিন্দা, বাসাবো পয়ঃ পাম্পিং স্টেশন, ঢাকা শহরের ভূ-পৃষ্ঠের পানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি পুকুর, মিরপুর মাজার পুকুর এবং বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর পানি নমুনা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, ওয়াসার পরিশোধিত পানিতে ভাইরাসটির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে ঢাকা শহরের পুকুর ও নদীর পানিতেও মিলেনি করোনার জীবাণু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে কোন ভাইরাস যাতে ওয়াসার পানিতে না থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, 'এখনো কিছু কিছু পানিবাহিত রোগ আছে। ঢাকায় যেসব পুরোনো পাইপ লাইন ছিল, সেগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে। একটা এলাকায় যদি দুই হাজার মানুষ থাকে, সেখানে দুই থেকে চার ইঞ্চি লাইন বসানো হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে ২০ হাজার লোক হয়ে যায়। তাই, এ সমস্ত এলাকা চিহ্নিত করে তেমন পাইপ লাগাতে হবে।' তাজুল ইসলাম বলেন, 'ওয়াসা যে পানি পরিশোধন করে সেটা শতভাগ নিরাপদ। কিন্তু যে পাইপলাইন দিয়ে যায়, সেগুলোতেই সমস্যা হয়ে থাকে। একইসঙ্গে জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে।'
বিত্তবানদের এলাকায় পানির দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন মন্ত্রী। বলেন, 'বস্তি এলাকায় ভর্তুকি দেন। ধনী এলাকায় কমে দেবেন কেন? আমার কাছে কমে কেন? সেটা কি সঠিক?' স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, 'পানির দাম বাড়াবে নকি কমাবে আমার কাছে অনুমতি চাচ্ছেন। আমি বললাম, পানির দাম বাড়াবেন না কমাবেন এটাতো আপনারা ঠিক করবেন। এখন উৎপাদন খরচ যদি ২০ টাকা ২৫ টাকা উৎপাদন খরচ হয় তাহলে আপনি ঢাকা শহরের মানুষ যারা বিত্তবান আমি গুলশানে বসবাস করি, আমাকে আপনি পানি খাওয়াবেন ১৫ টাকা নিয়ে, আর ওই গ্রামগঞ্জের মানুষগুলোকে দেখেন। ওই বস্তির মানুষ পানি পায়না।'
তিনি বলেন, 'আমরা যারা বড়লোক যারা গুলশানে থাকি, বনানীতে থাকি আমাদের যে দাম নিবেন, যাত্রাবাড়ীতে থাকলেও সেই দাম নেবেন, আবার ঢাকার বাইরে থাকলেও সেই দামি নিবেন। এটা তো বিচার না।' ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেন, 'শুধুমাত্র গতানুগতিকভাবে এই গবেষণা চালানো হয়নি, প্রকৃত অবস্থা তুলে আনতেই গবেষণাটি চালানো হয়েছে। করোনার সময়ে জীবন ও জীবিকা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হাত ধোঁয়ার বিষয়টি দেখেছি।' তিনি বলেন, 'একই সঙ্গে আমাদের পানিতে করোনার কোন অস্তিত্ব আছে কিনা? সেটি দেখতে আইসিডিডিআরবির সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণাটি করা হয়। আশার কথা হলো, আমরা নিশ্চিত হলাম ঢাকা ওয়াসার পরিশোধিত পানিতে করোনার জীবাণু নেই।'
এসএম/এএজেড