লাউতলা খাল রক্ষায় সিসি ক্যামেরা বসাবে ডিএনসিসি
’অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমরা এই লাউতলা-রামচন্দ্রপুর খাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। খাল পরিষ্কার রাখা ও তদারকির জন্য বিশেষ টিম গঠন করে দেয়া হবে এবং সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। খাল দূষণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুনরুদ্ধারকৃত লাউতলা খালের শুভ উদ্বোধন ও খাল দূষণ রোধে জনসাধারনের অংশগ্রহনমূলক কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, এই রামচন্দ্রপুর-লাউতলা খালের উপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠে ট্রাক স্ট্যান্ড। ১৪ বছর ধরে থাকা সেই অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড আমরা উচ্ছেদ করেছি খালটিকে বাঁচানোর জন্য। এখন খালে পানির প্রবাহ দেখতে পাচ্ছি।
প্রায় ১ বছর আড়াই মাস আগে আমরা ঢাকা ওয়াসা থেকে ২৯ টি খাল বুঝে পাই এমন তথ্য জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, পাওয়ার পর থেকেই দেখছি দুই 'দ' অর্থাৎ 'দখল' আর 'দূষণ' এর কবলে খালগুলো সব মৃতপ্রায়। খালে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ দেখার অভিপ্রায় নিয়ে আমরা কাজ করছি নিরন্তর।
নগরবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখেছি মানুষ এই খালকে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করছে। এই খালে পলিথিন, পুরোনো সোফা, কার্পেট, চটের বস্তাসহ বাসা-বাড়ির সকল ধরনের ময়লা ফেলা হয়েছে। খালে ময়লা ফেলা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
আতিকুল ইসলামব বলেন, এই খাল দিয়ে নৌযান চলবে, মাছের চাষ হবে এবং জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে। এর জন্য সরকার ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে জনগণেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণকে সংঘবদ্ধভাবে খাল দখলদার ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে লাউতলা খাল থেকে চারটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করে রামচন্দ্রপুরে বুড়িগঙ্গা নদীর সংযোগস্থলে পৌঁছান।
নৌকায় চড়ে খালটি পরিদর্শন শেষে মেয়র বলেন, ‘পয়তাল্লিশ মিনিটের এই যাত্রাপথটি নৌযানে পৌঁছাতে মাত্র ছয় মিনিট সময় লাগবে। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে প্রাথমিকভাবে ২০টি ইঞ্জিনচালিত নৌকার লাইসেন্স প্রদান করব এই পথে যাত্রী পারাপারের জন্য।’
নৌকায় চড়ে আমি দেখেছি অসংখ্য খামার ও বাড়ির বর্জ্য সরাসরি এই খালে গিয়ে পরছে জানিয়ে খামারি ও বাড়ির মালিকদের হুশিয়ারি দিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আপনারা ব্যবসা করবেন কিন্তু এই খালের ও শহরের ক্ষতি করবেন না। শুধু নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে সকলের কথা চিন্তা করবেন, এই শহরের কথা চিন্তা করবেন।’
মেয়র বলেন, এই খালটির এতোদিন সঠিক তদারকি ছিল না। এখন এই খালটির দায়িত্ব নিয়েছে সিটি করপোরেশন। খালের সীমানা নির্ধারণের কাজ চলমান। খালের সীমানার মধ্যে যত স্থাপনা থাকবে সব ভেংগে ফেলা হবে। সীমানা নির্ধারণ হলে এই খালের পার দিয়ে ওয়াকওয়ে এবং সবুজায়ন করা হবে। যদি জায়গা বেশি পরিমাণ থাকে সেক্ষেত্রে সাইকেল লেনও করা হবে।
ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলামসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরইউ/এমএমএ/