‘একুশ আমাদের গর্ব ও অহংকার’
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ‘প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি’ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে একুশের মহান শহিদ দিবস ও আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে গতকাল আরো কমসূচির আয়োজন করেছে।
গতকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি, বুধবার প্রাইম এশিয়া ইউনিভাসিটি মিলনায়তনে বিশেষ আলোচনা ও দোয়ার আয়োজন করেছে প্রশাসন।
প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন প্রাইম এশিয়া ইউনিভাসিটি বোড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান মো. রায়হান আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইফফাত জাহান। সভাপতি ছিলেন উপ-উপাচায অধ্যাপক ড. মো. নূরন্নবী মোল্লা।
প্রধান অতিথি বলেছেন, ’আমি আমাদের ‘প্রাইম এশিয়া ইউনিভাসিটি’র সবার পক্ষ থেকে একুশের ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জাতিসংঘে সবপ্রথম বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মযাদা বিকশিত করেছেন।’
বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান মো. রায়হান আজাদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা ভাষার জন্য ১৯৫২ সালের ভাষা শহিদদের আত্মদানকে আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘ স্বীকৃতি প্রদান করেছে। এটি বিশ্বের সব ভাষাভাষীদের জন্য অনন্য গৌরবের।
তিনি বলেছেন, আমাদের জাতীয় জীবনেও আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারির অপরিসীম গুরুত্ব আছে। সেজন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েরসহ সব ছাত্র, ছাত্রীকে বাংলাকে অন্তরে ধারণ করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সব অবস্থায় বাংলা ভাষাকে ব্যবহার করতে উৎসাহিত করছি। অনুরোধ করছি এজন্য আমাদের অধ্যাপকদের বাংলা ভাষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ছাত্র, ছাত্রীদের আরো ভালো করে জানাবেন। আমি সবার হয়ে আবারও ভাষা শহিদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
বিশেষ অতিথির ভাষণে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইফফাত জাহান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে বাস্তবায়ন করতে মাতৃভাষাকে দিবসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক না রেখে সবাইকে অন্তরে ধারণ করতে অনুরোধ করছি। আরো বলেছেন, বাংলা ভাষার মিশ্র ও অপসংস্কৃতি ব্যবহার না করলে ছাত্র, ছাত্রীদের অনুরোধ জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সবাইকে বাংলার চচা করে এই ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে অনুরোধ করছি। আমরা জানি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলা ভাষার মযাদাকে অক্ষুন্ন রাখতে চচা ও সবস্তরে প্রয়োগে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।’
প্রাইম এশিয়া ইউনিভাসিটির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যে অন্যদের মতো বাংলা ভাষার জন্য শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে একুশের মহান চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মেধা ও মননের বিকাশের আহবান জানিয়েছেন।
প্রাইম এশিয়া ইউনিভাসিটির স্কুল অব বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ড. নাশিদ কামাল এই আলোচনায় ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের তথ্যচিত্রে ছাত্র, শিক্ষক সবার সামনে তুলে ধরেছেন। তাদের পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পক আলোচনা করেছেন। ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
স্কুল অব সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক ড. শুভময় দত্ত বলেছেন, মাতৃভাষার পটভূমি ও ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকা।
ফার্মেসি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এস. কে. ফিরোজ বলেছেন, ‘একুশ আমাদের গব ও অহংকার।’
ভাষা দিবস ও আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনায় চমক হিসেবে প্রাইম এশিয়া ইউনিভাসিটির প্রথম ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষাথী সারাহবান তোহুরা সারাহ এসেছিলেন। তিনি অবহেলিত সম্প্রদায়কে উচ্চতম শিক্ষা প্রদানে তাকে ভতি করে উৎসাহিত করায় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ও তার গল্প বলেছেন।
এরপর তাকে মো. রায়হান আজাদ, অধ্যাপক ড. মো. নূরন্নবী মোল্লা ও অধ্যাপক ড. ইফফাত জাহান তাকে শুভেচ্ছা স্মারক উপহার দিয়ে উৎসাহিত করেছেন।
প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির মানবিক বিভাগের প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল ক্লাবের আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. নাসরিন জাহান ভাষা শহীদদের তার ও ক্লাবের হয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরন্নবী মোল্লা ভাষা সৈনিকদের রক্তের দাম দিয়ে কেনা বাংলা ভাষার শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এই আন্দোলনের পটভূমি ও ভাষা শহিদদের অবদান আলোচনা করেছেন। শেখ হাসিনার ইউনেসকোতে বাংলাকে আন্তজাতিক মাতৃভাষা করতে কমউদ্যোগ জানিয়েছেন। এরপর তিনি এই দিবসের বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেছেন।
ওএস/