একুশেতে হলো পথশিশুদের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা
লেখা ও ছবি : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
‘কিন’ স্কুলের নাম অনেকেই জানেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রীদের বিখ্যাত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাদের একটি প্রথম থেকে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে, যারা পড়ালেখা করতে পারে না অভাবে, একেবারেই গরিবের ছেলেমেয়ে; পথের ধারে বেঁচে থাকে তাদের জন্য। সেটিই কিন স্কুল।
সারা বছর তারা খেয়ে না খেয়ে, চেয়ে,চিন্তে; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রীদের দেওয়া বই, খাতা ও জায়গাতে এবং তাদের শিক্ষকতার সুবাদে পড়ালেখা শিখতে পারে। তবে তাদের মধ্যে ভাষার প্রতি ভালোবাসা, আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস কী, কেন-এই বোধগুলোও জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। ফলে হাত বাড়ালো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
ভোরে কিনের এই ছাত্রছাত্রীরা সবাই প্রভাত ফেরিতে গিয়েছেন। শাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে ফুল দিয়েছেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে।
তাদের দিনটি একেবারেই অন্যরকম করে দিয়েছেন এরপর শিক্ষকরা। কিনের বিদ্যালয়ের ৬০ জন ছাত্র, ছাত্রীকে নিয়ে একটি ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা করেছেন তারা।
২১শে ফেব্রæয়ারির সকাল ১০টায় আঁকার আসরের শুরু হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, স্থান হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড। ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’ শহিদ দিবস ও আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে পালন করতেই এই আয়োজনটি করেছে। তাদের মধ্যে মননশীলতা গড়ে দিতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক কাটুন ফ্যাক্টরি।
ছবি আঁকার এই ভুবনটিকে তারা করেছেন দারুণ রঙিন। তাতে কিনের শিক্ষকরা ছিলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যরাও ছিলেন। শিশু ছাত্র, ছাত্রীদের তিনটি বিভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। তাদের জন্য ছিল আলাদা তিনটি বিষয়।
প্রথম থেকে চতুথ শ্রেণীর ছাত্র, ছাত্রীরা ছিল ‘ক’ বিভাগে। তাদের জন্য বিষয় ছিল ‘আমার দেশ’। খ বিভাগে ছিল পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র, ছাত্রীরা। তাদের বিভাগ ছিল ‘বাংলা ও বাংলাদেশ’। অষ্টম থেকে একাদশের ছাত্র, ছাত্রীদের জন্য বিষয় ছিল ‘ভাষার প্রতি ভালোবাসা’। তারা ছিল ‘গ’ বিভাগে। ফলে কিন স্কুলের সব ছাত্র, ছাত্রীরা অংশ নিয়েছে ছবি আঁকার ভুবনে।
বিকেলে ছবি আঁকা শেষে তিনটি বিভাগ থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়-এভাবে মোট নয়জনকে পুরস্কার দিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। এভাবেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়ে গেল আন্তজাতিক মাতৃভাষা ও একুশের শহিদ দিবসের বিশেষ আয়োজন।
ওএস।